১৭ মে জনগণের ক্ষমতায়ন দিবস

১৭ মে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিন। বাঙালীর অধিকার আদায়, গণতন্ত্র, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং বাংলাদেশের নব জাগরণের দিন। বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষের জন্য দিনটি জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। কারণ, রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাই বিশ্বে একমাত্র নেতা যার একটি রাজনৈতিক দর্শন রয়েছে। মৌলবাদী অপশক্তির বিরুদ্ধে বজ্রহুংকার ধারণের প্রধানশক্তি নিঃসন্দেহে জননেত্রী শেখ হাসিনা। সেদিন পৌরাণিক ফিনিক্সের ন্যায় বাংলার মাটিকে পরিশুদ্ধ করার প্রত্যয় নিয়ে জনগণের মাঝে প্রাণের সন্ধান করেছিলেন তিনি।
২০১২ সালে তার বিশ্ব শান্তির দর্শন জনগণের ক্ষমতায়ন জাতিসংঘে সর্বসম্মত ভাবে গৃহীত হয়। এটাই আজ বিশ্বশান্তির একমাত্র দলিল, একমাত্র পথ নির্দেশিকা। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার যাবতীয় রাজনৈতিক কর্মকান্ড আবর্তিত হয় জনগনের ক্ষমতায়ন দর্শণের আলোকেই। ১৯৮১ সালের এই দিনে তিনি যখন মাতৃভূমির পবিত্র মাটি স্পর্শ করেন তখন এই দেশ ছিলো গণতন্ত্রহীন। স্বৈরশাসনের ঘৃণ্য জাঁতাকলে এদেশের মানুষ ছিলো অবরুদ্ধ, সংবিধান ছিলো বন্দী, মানুষের অধিকার ছিলো বুটের তলায় পিষ্ট। ক্ষমতার উৎস তখন যেমন ছিল বন্দুকের নল তেমনী ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করার শক্তি ও ছিল বন্দুকের নল এবং শকুণের চোখ রাঙানি।
৮১র এই দিন থেকে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা একটি লক্ষ্য নিয়েই কাজ করেছেন তা হলো জনগণের ক্ষমতায়ন, জনগনের অধিকার।
তিনি মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন।
তিনি গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারায় বাংলাদেশকে ফিরিয়ে এনেছেন।অর্থনৈতিক শৃঙ্খল থেকে জাতির পিতার বাংলাদেশকে মুক্তি দিয়েছেন। বাংলাদেশ আজ অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায়। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা সাগর জয় করেছেন। মহাকাশে উড়িয়েছেন বাংলাদেশের বিজয় পতাকা। বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠিত করেছেন বাংলাদেশকে অনন্য মর্যাদায়। উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশ আজ পৌঁছে গেছে অসীম দিগন্তহীন মহাকাশে৷
বাংলাদেশকে বর্তমানে বিশ্বে উদীয়মান অর্থনীতির দেশ হিসেবে চিহ্নিত করছে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ)। বাংলাদেশের সামনে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ থাকলে যেই গতিতে দেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে, রাজনৈতিক স্থিতি থাকলে তা অনায়াসে পার হয়ে যাওয়া সম্ভব বলে মনে করছে প্রতিষ্ঠানটি। দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়া বাংলাদেশ আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। অর্থনীতি, মানবসম্পদ, অবকাঠামো, নিরাপত্তা, রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে এমন কোন ক্ষেত্র নেই যেখানে উন্নতির ছোঁয়া লাগেনি।
২০১০ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের শপথ নিয়ে সরকার গঠন করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। সেই সময় বিষয়টি নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা হলেও বর্তমানে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবতা দেখছে বিশ্ব। ডিজিটাল বাংলাদেশের কল্যাণে তথ্য-প্রযুক্তিখাত থেকে বর্তমানে বাংলাদেশ অর্জন করছে বৈদেশিক মুদ্রা। ধারণা করা হচ্ছে দেশের মোট আয়ে অচিরেই ১০ ভাগ দখল করে নেবে এই তথ্য-প্রযুক্তি খাত। করোনা মহামারি মোকাবেলায় বাংলাদেশ ডিজিটাল যেই প্লাটফর্মগুলো ব্যবহার করতে সক্ষম হয়েছে তা ছিলো ডিজিটাল বাংলাদেশের কল্যাণে। বর্তমানে দেশের সকল জেলা শহর ছাড়িয়ে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত বিস্তৃত হচ্ছে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সার্ভিস। সেই সঙ্গে আইসিটি বিষয়ক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ পৌঁছে দেয়া হচ্ছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে। সে কারণেই বর্তমানে বরিশালের প্রান্তিক কোন অঞ্চল থেকেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন রোবট তৈরির স্বপ্ন দেখে বাংলাদেশের তরুণ সমাজ।
পাকিস্তানের শোষণ নির্যাতন ও লুটপাটের কারণে ১৯৭০ সালে পর ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের জিডিপি ছিলো ঋণাত্মক ১৩.৯৭ শতাংশ। কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসাধারণ নেতৃত্বে মাত্র ১ বছরের মধ্যে ১৭.৩ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয় বাংলাদেশের। বোঝাই যায় জাতির পিতা বেঁচে থাকলে এভাবেই এগিয়ে যেতো বাংলাদেশ। কিন্তু ১৯৭৫ সালে তাকে হত্যার পর বাংলাদেশের উন্নয়ন যেন থমকে যায়। এ সময় জিডিপি'তে যা যুক্ত হতো তার বড় অংশ ছিলো বৈদেশিক ঋণ। মানুষের মাথাপিছু আয় ও ঋণ এক সময় ছিলো বেশ কাছাকাছি। ১৯৯৬ সালে ৫ বছরের জন্য আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে এই ঋণের কলঙ্ক থেকে মুক্ত করার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত তা আর হয়ে ওঠেনি। কিন্তু ২০১০ সালে বঙ্গবন্ধুর 'সোনার বাংলা' গড়ার স্বপ্ন নিয়ে শেখ হাসিনা যখন সরকার গঠন করে, এ দেশের মানুষ অন্য এক বাংলাদেশের গল্প শুনতে পায়। এক সময় যেই বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বলে সমালোচনা করা হয়েছিলো, সেই দেশই আজ বিশ্ব বাজারে বিনিয়োগের কেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে। রাশিয়া, চীন, জাপান, কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুরু করে প্রতিবেশী ভারতও বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। শুধু তাই নয়, নিম্ন আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশ হতে যাওয়া বাংলাদেশ আগামী দশকে মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের মত অর্থনৈতিক শক্তি অর্জন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শুধু বাংলাদেশের মানুষের নেতা নন তিনি। তিনি আজ বিশ্বমানবতার কণ্ঠস্বর। দশ লাখেরও বেশী রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে তিনি প্রমাণ করেছন তিনি ‘মানবতার নেতা।’সাগরের চেয়েও বড় তাঁর হৃদয়।মহাকাশের চেয়ে উন্মুক্ত তার উদারতা। তিনি জনগণের জন্য উৎসগীকৃত প্রাণ এক ক্ষণজন্মা মানুষ। যার চিন্তা, চেতনায় শুধু জনগণের কল্যাণ।তিনিই তো জনগণের ক্ষমতায়নের রূপকার। একারণেই আমরা আজকের দিনটি ‘জনগণের ক্ষমতায়ন’ দিবস আপামর জনতার জন্য। ১৭ মে শেখ হাসিনা যদি প্রিয় স্বদেশে না ফিরতেন তাহলে হয়তো বাঙালীর মুক্তি হতো না, বিশ্ব মানবতা কাঁদতো।
অনন্য প্রতীক রাউত
শিক্ষার্থী, আইন বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
এমএসএম / এমএসএম

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার গণতন্ত্রের জন্য চ্যালেঞ্জ

কোচিং-এর গোলকধাঁধায়, শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে গুরুত্ব নেই

সাংবাদিকের দল সমর্থন গণতন্ত্রের জন্য হুমকি

ইঁদুরের কৃতজ্ঞতা

নাগরিক সেবা ও প্রত্যাশার সংকট: রাষ্ট্রীয় কর্মচারী কোথায়?

টেকসই সমাজ গঠনে সাম্য একটি অপরিহার্য ভিত্তি

শুভ জন্মাষ্টমী : সত্য, সুন্দর ও সাম্য প্রতিষ্ঠায় শান্তির বার্তা

রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অপরিহার্য

জনগণের অংশগ্রহণে নির্বাচিতরাই কাশ্মীরের শাসক

স্বৈরশাসকের বিদায়, বিদ্রোহ ও পলায়ন

জনগণের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় তারেক রহমান

এপিআই ও এক্সিপিয়েন্ট উৎপাদনে বাংলাদেশের আত্মনির্ভরশীলতা: স্বাস্থ্য ও অর্থনীতির নবদিগন্ত উন্মোচন

ট্রাম্প-উরসুলার বাণিজ্য চুক্তিতে স্বস্তির হাওয়া
Link Copied