ঢাকা মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৫

ভয়াবহ আগুনে পুড়ছে শত শত মানুষ: মোবাইলে ব্যস্ত জনতা!


আমির হামজা, রাউজান  photo আমির হামজা, রাউজান
প্রকাশিত: ৮-৬-২০২২ দুপুর ৩:৫৮
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় হতাহতদের উদ্ধার কাজে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী আর ফায়ার সার্ভিসের লোকজন সেই সাথে স্থানীয় কিছু মানবিক মানুষ। মানুষের জীবন বাঁচাতে ছোটাছুটি শুরু সবার। কিন্তু এ সময় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে আমাদের কিছু বাংলার মানুষ! তারা অগ্নিকাণ্ড রোধে নয়, নিজের মোবাইল ফোনে “সেলফি, ভিডিও, ফেইসবুক লাইভে তারা ব্যস্ত। এটা আবার কেমন সোনার বাংলাদেশ! যে সোনার ছেলেরা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিএম কন্টেইনার ডিপোতে আগুনের তাপে জ্বলে পুড়ে ছাই হচ্ছে, এটার কোনো চিন্তার বিষয় আসে আর যায়না। কারণ আমাদের তো সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয় হতে হবে।
 
জ্বলে পুড়ে মরছে এটার বিষয় বড় নয়, সোশ্যাল মিডিয়ার এই যুগে কার আগে কে আপলোড দিতে পারে তাই নিয়ে ব্যস্ত। শুধু কি তাই বিএম কন্টেইনার ডিপোতে আগুনে জ্বলে পুড়ে মরছে অসংখ্যা মানুষ। এটার বিষয় দেখার বড় নয় পকেট থেকে স্মার্টফোন বাহির করে দ্রুত ছবি, ভিডিও, লাইভ ইত্যাদি হচ্ছে দেখার বিষয়। ডিপোতে শত শত মানুষের আবেগময় কান্না আর কিছু জ্ঞানহীন মানুষের সেলফি আর মোবাইলে ভিডিও তুলা নিয়ে ব্যস্ত।
 
আবার দেখা যায় অসংখ্যা মানুষ নিজের প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে এই সময় উদ্ধার কাজে সহযোগীতা করছেন। এবং কি ফায়ার সার্ভিসের যারা প্রথম পযার্য়ে কাজে যোগ দিয়েছিলেন তারা মুহূর্তে উড়ে যায়। এরপর জীবনের বাজীরেখে তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে আর মানুষের জীবন বাঁচাতে কাজ করেছেন। যাতে ডিপোর ভিতরে আটকে পড়া মানুষ গুলো যেন সুস্থ ভাবে বেঁচে আসতে পারে। তাঁরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করছে। যাতে জলন্ত আগুনে কিছু পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, ফায়ার সার্ভিস থেকে শুরু করে সকল কাজে তাঁদের সহযোগীতার ছোট হাত বাড়িয়ে দিয়ে প্রাণের বিনিময়ে কাজ করছে। তারা সেলফি, ভিডিও নয় এসময় আগুনের যন্ত্রণা থেকে ডিপোতে থাকা সেই ভাগ্যহীন মানুষ গুলো যেন নিজের পরিবারের মা বাবার বুকে ফিরে চলে আসতে পারে। তার জন্য কাজ করে যাচ্ছিলেন।
 
আবার ডিপোর বাহিরে এবং চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অনেক মানুষ করছে ছোটাছুটি কোনো সময় চোখের পানি ফেলে আল্লাহ্, আল্লাহ্, তুমি রক্ষা কর, যে যার ধর্মের প্রভু’কে একবার হলেও বলছে আপনি মহান, এই অসহায় প্রাণ গুলো’কে আপনি একটু রক্ষা করুন মালিক। কোনো সময় টিভির পর্দায় কোটি কোটি মানুষ সরাসরি দেখছে ডিপোর ঘটনা, এই সময় অনেকেই খাবার পর্যন্ত খেতে পারেনি, টিভির পর্দায় বসে দেখা মানুষ গুলো হয়তো চোখের পানি ফেলছে, নয়তো নফল নামাজ পড়ে আবেদন করেছেন আল্লাহর কাছে, এমন কোনো মানুষ নেই তার প্রভু’কে স্মরণ করেনি। যে যার মত করে সৃষ্টিকর্তা স্মরণ করেছেন। যেন মানুষ গুলো নিরাপদে বেঁচে আসতে পারে। অন্যদিকে গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ, রাজনীতি বিভিন্ন নেতাকর্মী ও নানা সামাজিক সংগঠন গুলো দেখা যায় তার চোখে মুখে দেশ প্রেমের একটি ভাব প্রকাশ হচ্ছে। তারা আমাদের শিক্ষা দিচ্ছে ছবি, ভিডিও ইত্যাদি তুলে নয় এখানে দূরসময়ের আপনাদের যে যার মত কাজ করে বিপদে পড়া মানুষ গুলো যাতে আমাদের মাঝে ফিরে আসতে পারে।
 
স্যালুট জানাই বিশেষ করে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি উদ্ধার কাজ থেকে শুরু করে ওষুধ খাদ্য দিয়ে মানুষ পাশে ছিলো গাউসীয় কমিটি বাংলাদেশ মানবিক টিম এবং নানা সামাজিক সংগঠন গুলো। 
 
অন্যদিকে নিজের প্রাণের সকল ঝূঁকি নিয়ে কাজ করেছে আমাদের ফায়ারসার্ভিস টিম এরা জীবন্ত অবস্থায় কিছু শ্রমিকে নানা কৌশলে নিয়ে আটকে পড়া লোকজনকে বাঁচতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বলা যেতে পারে ফায়ার সার্ভিস দল আমাদের দেশের অহংকার। তারা সেই মুহূর্তে তাদের সহকর্মীর মৃত্যু দেখেছেন, কিন্তু দায়িত্বে একবিন্দুও হাল ছাড়েনি।
 
হ্যা আপনি ছবি তুলবেন ভিডিও প্রকাশ করবেন কিন্তু এসময় আপনাকে সেলফি তোলা মানাই না, হয়তো আপনার তোলা ছবি বা ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়া ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার কাজে এগিয়ে আসতে পারে। আবার দেখাযায়ই উদ্ধার কাজ থেকে বেশি জনতা আগ্রহ প্রকাশ করে তার মোবাইল ফোনে ক্যাপশন বিহিন মতামত প্রকাশ করা, যা একটি ঘটনাস্থলে সহজে মেনে নেওয়া যাইনা, যে সময়ে উদ্ধার কাজে ব্যস্ত সময় পার করবে, সেই সময় মোবাইলে ব্যস্ত আমাদের হাজার হাজার জনতা। আমাদের সমাজিক যোগাযোগ ব্যবহারে সুন্দর পরিবেশ তৈরি করতে হবে। তা নাহলে কোন ঘটনাস্থলে মানুষের জীবন না বাঁচিয়ে, সাধারণ জনতা ব্যবস্ত থাকবে মোবাইলে। সে সময়ে ছবি ভিডিও ইত্যাদি নিয়ে যেখানে দেশের মিডিয়ার লোকজন সঠিক সংবাদ প্রদান করবেন, সেই স্থানে সেই সময় আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া লোকজন উদ্ধার কাজে ব্যস্ত না হয়ে তারা ছবি, ভিডিও, লাইভে ব্যস্ত। আসুন পরিবর্তন হোক মনমানসিকতা। 
 
লেখক : আমির হামজা,
সংবাদকর্মী, সংগঠক ও শিক্ষার্থী
সরকারি হাজী মুহাম্মদ মুহসীন কলেজ। 

এমএসএম / জামান

রেলের উন্নয়ন কেবল প্রকল্প নয়, দরকার র্কাযকর ব্যবস্থাপনা

অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতি

টেকসই উন্নয়নে প্রাথমিক শিক্ষা

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি ও বাস্তবতা

গাজায় যুদ্ধের নৃশংসতা ও আন্তর্জাতিক বিচার আদালত

বন্ধ হোক অপসাংবাদিকতা

বিভাজনের রাজনীতি দেশের জন্য হুমকি হতে পারে

প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের স্বপ্নের সৌদি আরব

শারদীয় দুর্গোৎসবে সম্প্রীতির বাংলাদেশ ভাবনা

দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য প্রয়োজন পর্যটন গন্তব্যগুলোর সামগ্রিক উন্নয়ন এবং শক্তিশালী ব্র্যান্ডিং

গণতান্ত্রিক অধিকার ও নতুন নেতৃত্বের অন্বেষণ

দুঃখই সবচেয়ে আপন

জাতিগত নিধন বন্ধে জাতিসংঘের ব্যর্থতা