অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক অর্থনীতি এখন যখন অস্থির

অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক ক্ষয়ক্ষতি ও পরিণাম বিবেচনা না করেই বাইডেন প্রশাসন বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্য ধরে রাখার ক্ষেত্রে মরিয়া প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এই ভুল দৃষ্টিভঙ্গির খেসারত দিতে হচ্ছে পুরো বিশ্বকেই। মার্কিন নেতৃত্বে পরিচালিত এক মেরুর বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের নেতারা তাঁদের পিছু পিছু চলা দেশগুলোর সামনে সব সময় মুলা ও চাবুক-এর দ্বৈত নীতি বজায় রেখে চলেছে। এ ক্ষেত্রে মুলা হলো মার্কিন শিবিরে যুক্ত হওয়া দেশকে দেওয়া বৈদেশিক সহযোগিতা। আর চাবুক হলো, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এবং সামরিক সহযোগিতা তুলে নেওয়ার ভয় দেখানো। বাইরে থেকে অনেকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক শক্তি ও স্থিতিশীলতা নিয়ে যে ধারণা পোষণ করেন, প্রকৃত অবস্থাটা সে রকম নয়। আবার বাইডেন প্রশাসন একতরফাভাবে আফগানিস্তান ও রাশিয়ার বৈদেশিক মুদ্রার তহবিল আটকে দিয়েছে। এতে করে জিম্মাদার হিসেবে তাদের বিশ্বস্ততা বড় প্রশ্নের মুখে পড়েছে। বাকি বিশ্বের কাছে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বিশ্বাসযোগ্যতা ও আস্থার সংকট তৈরি হওয়ায় অনেক ধরনের মানে রয়েছে। আফগানিস্তানে বিশ বছরের যুদ্ধ এবং বাজে ধরনের পরাজয়ের পর যুক্তরাষ্ট্রের সেই রসদ ফুরিয়ে এসেছে। চাবুকটাও এখন কুঁচকে গেছে, সেটা এখন আর ততটা ভয় দেখাতে পারে না। সে কারণেই ইউক্রেনে সেনা না পাঠিয়ে শুধু সমরাস্ত্র পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সরাসরি যুদ্ধে যুক্ত না হয়ে আমেরিকা সেখানে শুধু প্রক্সি যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চায়। বিশ্বনেতৃত্বের আগের সেই অবস্থান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের যে ক্ষয় হয়েছে, সেটা এখন বাইডেন প্রশাসন ভুলে গেছে। তারা এখন বিশ্বের সব প্রান্তে যাচ্ছে, দেশগুলোর কাছে আমেরিকার ভূরাজনৈতিক অবস্থানের বিচারে পক্ষ ও মিত্র বেছে নেওয়ার চাপ দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র চীনকে নিজেদের ভবিষ্যতের জন্য প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বলে মনে করছে। এদিকে বিশ্বজুড়ে যে অর্থনৈতিক মন্দা পরিলক্ষিত হচ্ছে,তার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে। এই অর্থনৈতিক সংকট কেটে যাওয়ার কোনো লক্ষণ নেই। বরং তা আরও গভীর ও দীর্ঘ হচ্ছে। অর্থনীতির অনেকগুলো সূচকই আরও দুর্বল হয়েছে।
জ্বালানি ও বিদ্যুৎ-সংকট আরও বেড়েছে। খাদ্য-সংকটের আশঙ্কা বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়েই। চলতি বছরে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ কমেছে ১১ বিলিয়ন ডলার বা ১ হাজার ১০০ কোটি ডলারেরও বেশি। রপ্তানি ও প্রবাসী আয়ের গতি কমেছে। বৈদেশিক মুদ্রা আয় কম বলে লেনদেনের ঘাটতি এখন রেকর্ড পরিমাণ। সাধারণ মানুষের সবচেয়ে বড় সমস্যা এখন মূল্যস্ফীতি। এতে জীবনযাপনের খরচ বেড়ে গেছে, কমেছে প্রকৃত আয়। উদ্যোক্তাদের জন্য বড় সমস্যা বিদ্যুৎ ও জ্বালানিসংকট। উৎপাদন কম হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এখনো হিমশিম খাচ্ছে ডলার নিয়ে। সরকারের আয়ও কম। ফলে ভর্তুকির বরাদ্দও বাড়াতে পারছে না। বিশ্ব অর্থনীতি নিয়েও কোনো ভালো কোনো পূর্বাভাস নেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক আগ্রাসীভাবে চলতি বছরেই ছয়বার নীতি সুদের হার বাড়িয়েছে। তারপরও মূল্যস্ফীতি তেমন কমছে না। বরং এর ফলে বিশ্বমন্দার আশঙ্কা আরও বাড়ছে। ২০২১ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে এ পর্যন্ত বাইডেন চীনের পণ্য আমদানির ওপর শুল্কনীতি বজায় রেখে চলেছে। এ বছরের শুরুতে একটি সংবাদ সম্মেলনে বাইডেন বলেছিলেন, ২০২০ সালে বেইজিং ও ট্রাম্পের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছিল, তার প্রথম পর্যায়ে যে প্রতিশ্রুতি চীন দিয়েছিল, তা পূরণ করেনি। চুক্তিটি চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বাণিজ্য-যুদ্ধের ক্ষেত্র স্বল্প মেয়াদে হলেও একটি স্বস্তির জায়গা তৈরি করে দিয়েছে। চুক্তির একটি শর্ত ছিল, চীন যদি মার্কিন পণ্য আমদানি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি করে, তাহলে ওয়াশিংটন শুল্কের সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করতে পারে। চীনের প্রতি ওয়াশিংটনের কঠোর নীতির ধারাবাহিকতা, তাইওয়ানে চীনের যেকোনো আগ্রাসন রুখে দিতে বাইডেনের প্রতিশ্রুতি, হংকংয়ের গণতন্ত্রের ওপর দমনপীড়নের সমালোচনা-এসব ক্ষেত্রে ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান দুই দলের আইনপ্রণেতাদের সমর্থন পাবেন বাইডেন। অনেক বিশ্লেষকের ভাষ্য হচ্ছে, বাইডেনের চীন-নীতি বরং দুই দলের মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তুলতে সহযোগিতা করছে।
সম্প্রতি জলবায়ু সম্মেলনে (কপ-২৭) যুক্তরাষ্ট্র যদি কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তিতে অনুসমর্থন করে, তাহলে তাতে প্রতিনিধিসভার সদস্যদের অনুসমর্থন পাওয়া তার জন্য এখন কঠিন হবে। দেশের ভেতরে হোক আর বাইরে হোক পরিবেশনীতিতে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের মধ্যে সুস্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে। পূর্বসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্প প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়ে এসেছিলেন। হোয়াইট হাউসে প্রথম কর্মদিবসেই বাইডেন আবার সেই চুক্তিতে ফিরে আসেন। জলবায়ু ও পরিবেশ ইস্যুতে রিপাবলিকান বন্ধুদের কাছে পাওয়া বাইডেনের জন্য কঠিন; যদিও বাইডেনের জলবায়ু দূত ও সাবকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি দাবি করেছেন, জলবায়ু নিয়ে আলোচনা মতাদর্শিক কোনো চর্চা নয়। জলবায়ু ইস্যুকে ভিত্তি করে যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভা বেশ কিছু আইন প্রণয়ন করেছে। কিন্তু রিপাবলিকান–নিয়ন্ত্রিত আইনসভায় জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সেসব আইন নতুন করে এগিয়ে নেওয়া কঠিন হতে পারে। রিপাবলিকানরা দাবি করেন, বাইডেনের পরিবেশনীতি একেবারে গোড়া সবুজ অ্যাজেন্ডা’। রিপাবলিকানরা অঙ্গীকার করেছেন, তাঁরা আইনসভার নিয়ন্ত্রণ পেলে এটা বন্ধ করে দেবেন।কিন্ত ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল বেইজিং সফরে যান। সি চিন পিংয়ের সঙ্গে পশ্চিমা নেতাদের সাক্ষাতের মিছিল যুক্ত হওয়া সর্বশেষ ব্যক্তি তিনি। এ বছরই সি চিন পিং কমিউনিস্ট পার্টি ও দেশে তাঁর নেতৃত্ব সুসংহত করেছেন। মাও সে-তুংয়ের পরে চীনের সবচেয়ে ক্ষমতাধর শাসক এখন তিনি। এ বছরের শুরুর দিকে বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত শীতকালীন অলিম্পিকের আসরে কমপক্ষে ২০টি দেশের সরকার প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সি চিন পিং। এসব দেশের কোনোটাই গণতান্ত্রিক দেশ নয়। ইউরোপের জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদ মিশেলের এই সফর থেকে একটি ইঙ্গিত স্পষ্ট হচ্ছে, চীনের প্রতি পশ্চিমাদের ভূরাজনৈতিক অবস্থান ইতিবাচক বদল হচ্ছে। আবার বেইজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক কেমন হবে, সেই ইস্যুতে পশ্চিমাদের মধ্যে গভীর বিভক্তির বিষয়টিও তাঁর এই সফরে স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
প্রথম বিভক্তিটা আটলান্টিক মহাসাগরের এপার-ওপারকে কেন্দ্র করে। এটা সত্য, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইন্দোনেশিয়ার বালিতে জি-২০ সম্মেলনের আগে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে যে বৈঠক করেছেন তাতে ওয়াশিংটনের সমঝোতামূলক দৃষ্টিভঙ্গি দেখা গেছে। কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়নের (বিশেষ করে ফ্রান্স ও জার্মানি) থেকে চীনের প্রতি ওয়াশিংটনের অবস্থান অত্যন্ত কট্টর। গত অক্টোবর মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল প্রকাশ হয়। সেখানে বলা হয়েছে, চীনই ‘একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী, যাদের বিশ্বব্যবস্থা বদলে দেওয়ার অভিপ্রায় রয়েছে এবং সেটা করার জন্য তারা আরও অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক, সামরিক ও প্রযুক্তিগত শক্তি বৃদ্ধি করছে।এর ফলে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের প্রতি স্থায়ী প্রতিযোগিতা বজায় রাখা এখন যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকার। যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপীয় মিত্রদের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে যাতে করে চীনের প্রতি ওয়াশিংটনের নেওয়া কঠোর অবস্থান ইইউও বজায় রেখে চলে। কিন্তু ইউরোপ সে পথে হাঁটছে না। চীনের ওপর যুক্তরাষ্ট্র নতুন যে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তাতে নেদারল্যান্ডস উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ ওয়াশিংটনে বাইডেনের সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়ে কথা তুলেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। আটলান্টিক মহাসাগরের দুই তীরের মধ্যে যে বিভক্তি থাকবে, সেটা সাধারণভাবেই ধারণা করা যায়। কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যেই চীনের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি কী হবে, তা নিয়ে এত স্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে যে সেটা ঢাকা দেওয়া কঠিন। দৃষ্টান্ত হিসেবে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে সম্পাদিত ইইউ-চায়না সমন্বিত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে এত শোরগোল ও সমালোচনা শুরু হয়েছিল যে সেটি অনুসমর্থনের প্রয়োজন পড়েছিল। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সবচেয়ে ক্ষুদ্র সদস্যরাষ্ট্রের একটি লিথুয়ানিয়া। দেশটির সরকার তাইওয়ানকে তাদের দেশে একটি বাণিজ্য কার্যালয় খোলার অনুমোদন দেয়। রাজধানী তাইপের বদলে তাইওয়ানের নাম তারা উল্লেখ করে।
চীনের সঙ্গে টানাপোড়েনের প্রধান একটি ইস্যু হয়ে ওঠে এ ঘটনা। চীন এটিকে এক চীন নীতি থেকে সরে আসার বিষয় হিসেবে বিবেচনা করে। এ ঘটনা ইউরোপীয় ইউনিয়নকেও মুশকিলে ফেলে। সদস্যরাষ্ট্র লিথুয়ানিয়ার পক্ষে দাঁড়াবে, নাকি দীর্ঘদিন ধরে তারা যে এক চীন নীতি বজায় রেখে চলছে, সেই অবস্থানে দাঁড়াবে, তা নিয়ে দ্বিধায় পড়ে যায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ওলাফ শলৎজের বেইজিং সফরও বিতর্কের ঊর্ধ্বে ছিল না। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশ কয়েকজন নেতা উদ্বেগ জানান, চীনের সঙ্গে জার্মানি আলাদা চুক্তি করলে তা ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঐক্যকে উপেক্ষা করা হবে। উপরন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঐক্য প্রদর্শন করার জন্য ফ্রান্সের পক্ষ থেকে মাখোঁ ও শলৎজের যৌথ বেইজিং সফরের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। সেই প্রস্তাব আপাতভাবে শলৎজ প্রত্যাখ্যান করেন। চীনের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হবে, সে বিষয়ে প্রায়ই পশ্চিমা কোনো একটি দেশের ভেতরেই ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে বিভক্তি দেখা যায়। লন্ডনের লর্ড মেয়র’স বানকোয়েট-এ বক্তৃতাকালে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক চীনের প্রতি একটি বলিষ্ঠ বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গির পক্ষে কথা বলেন। কনজারভেটিভ পার্টির কট্টরপন্থীদের চীনের প্রতি যে অনড় অবস্থান, তা থেকে কিছুটা ভারসাম্যমূলক অবস্থান ঋষির বক্তব্যে উঠে আসে। কিন্তু সম্প্রতি যুক্তরাজ্য সরকার চীনের ক্যামেরা ও নজরদারি ব্যবস্থা ব্যবহারের ওপর যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তাতে কট্টরপন্থীদের অবস্থান যে জয়ী হয়েছে, সেই ইঙ্গিত মিলছে। জার্মানির ক্ষেত্রেও একই ধরনের বিতর্ক চলছে। চীনের সঙ্গে ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের জন্য তৈরি করা নতুন একটি বিধির কারণে জার্মান সরকার বিতর্কের মুখে পড়েছে। চীনের বাইরে অন্য কোনো দেশে বাজার খুঁজতে কোম্পানিগুলোকে ভর্তুকি দেবে জার্মান সরকার। এ সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে গাড়ি প্রস্তুতকারী কোম্পানি মার্সিডিজ বেঞ্জের প্রধান নির্বাহী ওলা কায়েলিনিউইয়াস বলেছেন, চীনের বাজার থেকে বের হয়ে আসা চূড়ান্তভাবে অকল্পনীয় ব্যাপার।
চীন ইস্যুতে জার্মানির জোট সরকারের শরিকদের মধ্যেও বিরোধ রয়েছে। গ্রিন পার্টির চীনের ব্যাপারে অনীহা রয়েছে। এ সব প্রেক্ষাপটে মিশেলের সফর বেইজিংয়ের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্পর্কে মৌলিক কোনো পরিবর্তন হবে, সেটা ভাবা ঠিক হবে না। তবে বড় দুই অর্থনৈতিক শক্তির মধ্যে বাণিজ্য বিষয়ে সম্পর্কের ক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে। অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক অর্থনীতি এখন যখন অস্থির, সে সময় নতুন কোনো অভিঘাত তৈরি করা চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন কারও জন্যই ঠিক হবে না। ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন দের লিয়েন এক বিবৃতিতে বলেন, ইউক্রেনে বেসামরিক স্থাপনায় পুতিনের বর্বর ও সন্ত্রাসমূলক হামলার কারণে আসন্ন শীতে ইউক্রেনের মানুষকে বিদ্যুৎহীন হয়ে থাকতে হবে। এমনকি অনেক জায়গায় পানি সরবরাহও থাকবে না। এরপর ন্যাটোর বক্তব্যেরই পুনরাবৃত্তি করে তিনি বলেন, ইউক্রেনের প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়ন সমর্থন অব্যাহত থাকবে, সেটি যত দিন লাগুক। তিনি আরও বলেন, আমরা রাশিয়াকে যেখানে কাবু করা যায়, সেখানেই আঘাত করার কঠোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যাতে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোয় রাশিয়ার ক্ষমতাকে আরও ভোঁতা করে দেওয়া যায়। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে, ১১ মিলিয়নেরও বেশি ইউক্রেনীয় ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। শরণার্থীদেরও অস্থায়ীভাবে সুরক্ষা প্রকল্প নিয়ে দ্রুত এগিয়ে আসে দেশগুলো। এর মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে চিকিৎসা ও বাসস্থান সুবিধা পান শরণার্থীরা, এমনকি ২০২৪ সাল পর্যন্ত কাজ করার সুবিধাও দেওয়া হয় তাদের। এখন জেনেভাভিত্তিক সংস্থা মিক্সড মাইগ্রেশন সেন্টারের ডিরেক্টর ব্রাম ফ্রউস বলছেন, এই শীতে আরও বেশি ইউক্রেনীয় ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে ধেয়ে আসবে। নতুন করে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে ইউরোপের এই ব্লককে। তিনি আরও বলেন, ‘ইউরোপের নাগরিকেরা এবং তাদের সরকারগুলো কীভাবে এই পরিস্থিতির প্রতিক্রিয়া জানাবে তা এখন দেখার বিষয়।
লেখক: গবেষক ও কলামিস্ট, যুক্তরাজ্য
এমএসএম / এমএসএম

বাংলাদেশ সংবিধানের আলোচিত ৭০ অনুচ্ছেদ প্রেক্ষিতঃ রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমত

শতাব্দির সেরা মাটির সৈনিক কৃষক যোদ্ধা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম বাজেট ও জনগণের প্রত্যাশা

ট্রাম্প-সালমান কথোপকথনে বিশ্ব কী বার্তা পেল

এফবিসিসিআইর ডিজিটাল রূপান্তর : ব্যবসায়িক নেতাদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল সেবা

জাতীয় ঐকমত্য কঠিন হলেও উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

রাজনৈতিক অঙ্গনে এক অনন্য উচ্চতায় তারেক জিয়া

কেমিক্যাল আতঙ্ক নয়, চাই বিজ্ঞানসম্মত আমচাষ ও প্রশাসনিক সচেতনতা

শুভ অক্ষয় তৃতীয়া: দানে ধ্যানে অনন্তকালের পূণ্যলাভ

শিক্ষা উপকরণের ব্যবহার ও গুরুত্ব, বাংলাদেশ প্রেক্ষিত

ইসরায়েলের বর্বরোচিত যুদ্ধের অবসান হোক

চায়না-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ জেনারেল হাসপাতাল নিয়ে তিস্তা পাড় বাসীর প্রত্যাশা
