যে কারণে মুক্তিযোদ্ধা পেলেন না গার্ড অব অনার

চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের পশ্চিম জোয়ার গ্রামের আবদুর রশীদ মুহুরী বাড়ির (প্রকাশ মিন্টু চেয়ারম্যান বাড়ির) নুর মোহাম্মদের ছেলে মুক্তিযোদ্ধা মো. সাজেদ উল্লাহ গত মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। ওই মুক্তিযোদ্ধা করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে বাড়ির লোকজনের মনে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।
সরজমিন জানা যায়, ওই মুক্তিযোদ্ধার পুরো পরিবার করোনায় আক্রান্ত। এ আতঙ্কে বাড়ির লোকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির লাশ বাড়িতে না এনে কবরস্থানে দাফন করতে বলেন তারা। এসময় বাড়ির কয়েকজন মিলে প্রবেশপথে বাঁশ পুঁতে বাড়ির পথ বন্ধ করেছিল বলে জানা যায়। বাধাদানকারী ও মৃত ব্যক্তি একই বাড়ির সদস্য এবং তারা পরস্পর শ্যালক-দুলাভাই ও চাচাতো ভাই।
এ ব্যাপারে স্থানীয় মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা আব্দুল হালিমের সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি ওই মুক্তিযোদ্ধার লাশ দাফনের খবর শুনে কবর খোঁড়ার কাজে আনুষঙ্গিক জিনিস দিয়ে সার্বিক সহযোগিতা করেন। তিনি আরো বলেন, দাফনের নির্দিষ্ট সময় তাকে জানানো হয়নি পরিবারের পক্ষ থেকে। পরে আমি জানতে পারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা শেষ বিদায়ের বন্ধু সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা লাশের গোসল ও দাফনের ব্যবস্থা করেন।
’৭১-এর রণাঙ্গনের সম্মুখসারিতে যুদ্ধ করা এ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয় সম্মানটুকুও দেয়া সম্ভব হয়নি পরিবারের সদস্যদের অস্বচ্ছ তথ্য ও তাড়াহুড়ার কারণে। এজন্য রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার ছাড়াই তাকে দাফন করা হয়। তার জানাজায় উপস্থিত হতে পারেনি উপজেলা প্রশাসন। সময় স্বল্পতা এবং মৃত মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীসহ পরিবারের অন্য চার সদস্য করোনায় আক্রান্ত থাকায় এবং মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী করোনা আক্রান্ত হয়ে আইসিইউতে থাকায় প্রশাসন বা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারকে অবহিত না করে পরিবারের একক সিদ্ধান্তে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ছাড়াই তাকে দাফন করা হয়।
উল্লেখ্য, ওই ইউনিয়নের পশ্চিম জোয়ার গ্রামের আবদুর রশীদ মুহুরী বাড়ির নুর মোহাম্মদের ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সাজেদ উল্লাহ গত ৩০ জুলাই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হন। সাজেদ উল্লাহর স্ত্রী লুৎফুর নাহার (৬৫) ও তার পরিবারের ৫ সদস্যও করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় সবাই অনেকটা বিচলিত ছিলেন। মৃত্যুর পর তার ২ ছেলে চট্টগ্রাম শহর থেকে লাশ দাফনের জন্য মিরসরাই সদর ইউনিয়নের শেষ বিদায়ের বন্ধু সংগঠনের কার্যালয়ে লাশের গোসল শেষে গ্রামের কবরস্থানে নিয়ে আসেন।
সাজেদ উল্লাহর মেজো ছেলে হোসেন মো. জামিল বলেন, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বাবার মৃত্যুর পর গ্রামের লোকজন লাশের গোসল করানো, কবরের মাটি খোঁড়া ও দাফন করতে পারবে না বলে জানান। আমাদের বাড়ির গালিব নামে একজন বাড়ির প্রবেশমুখে বাঁশ পুঁতে দেয়, যাতে অ্যাম্বুলেন্স বাড়িতে প্রবেশ করতে না পারে। পরবর্তীতে বিষয়টি করেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়নকে জানালে তিনি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা শেষ বিদায়ের বন্ধুর মাধ্যমে লাশ পরিবহন ও গোসলের ব্যবস্থা করেন।
তিনি আরো বলেন, আমি বুধবার (৪ আগস্ট) সকাল ৬টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসায় যাই বাবার মৃত্যুর খবরটি দেয়ার জন্য। তিনি ঘুমে থাকায় দেখা করতে পারিনি। তবে নিরাপত্তা প্রহরীকে বাবার মৃত্যুর বিষয়টি অবহিত করে আসি। পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার কবির আহমেদকে মোবাইলে বাবার মৃত্যু ও জানাজার সময় সকাল ৯টায় নির্ধারণের বিষয়টি জানাই। তিনি গার্ড অব অনারের বিষয়ে ইউএনওকে জানাবেন বলে আমাকে আশ্বস্ত করেন।
এ ব্যাপারে মিরসরাই উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার কবির আহাম্মদ জানান, উপজেলার সহকারী কমান্ডার ফজলুল করিমের মাধ্যমে তিনি মুক্তিযোদ্ধা মো. সাজদ উল্লাহ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করার বিষয়টি শোনেন। সকাল ৮টায় ফোন দিয়ে ৯টায় জানাজার কথা জানানো হলে ১০টায় করার জন্য বলি। তার বাড়ি ও গ্রামবাসীর বিরোধিতার কথা না জানিয়ে পরিবারের লোকজন তাড়াহুড়া করে নির্দিষ্ট সময়ের আগে দাফন সম্পন্ন করে। তিনি আরো বলেন, উপজেলা প্রশাসন পথিমধ্যে জানতে পারে নির্দিষ্ট সময়ের আগে লাশ দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
শেষ বিদায়ের বন্ধু সংগঠনের সমন্বয়ক (সেবা) মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সাজেদ উল্লাহর দাফন-কাফনে বাড়ির লোক ও আত্মীয়স্বজনদের অসহযোগিতা ও মুক্তিযোদ্ধার ছেলেদের তাড়াহুড়ার কারণে নির্দিষ্ট সময়ের আগে দাফন সম্পন্ন করা হয়।
করেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন বলেন, মুক্তিযোদ্ধা সাজেদ উল্লাহর লাশ দাফনে গ্রামবাসী বাধা দিলে আমি, ইউপি সদস্য মো. শহীদ ও নাসিম উদ্দিন রুবেলসহ কবর খোঁড়ার ব্যবস্থা করি।
মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মিনহাজুর রহমান বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাজেদ উল্লাহকে গার্ড অব অনার প্রদানের জন্য মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও পরিবারের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সকাল ১০টায় সময় নির্ধারণ করা হলেও সময় স্বল্পতা এবং মৃত মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীসহ পরিবারের অন্য চার সদস্য করোনায় আক্রান্ত থাকায় এবং মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী করোনায় আক্রান্ত হয়ে আইসিইউতে থাকায় প্রশাসন বা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারকে অবহিত না করে পরিবারের একক সিদ্ধান্তে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ছাড়া দাফন করা হয়।
এমএসএম / জামান

জাঁকজমক ও আনন্দঘন পরিবেশে পাবনা জেলার ১৯৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

নওগাঁয় হারিয়েছে প্যাডেল চালিত রিকশাঃ ভরসা এখন ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা

বীর মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ন মিয়াকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন

রাজস্থলীতে নিয়ন্ত্রন হারিয়ে বাস খাদে, আহত ১

আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী জিহাদ হোসেন এইচএসসিতে জিপিএ-৫ অর্জন

আদমদীঘিতে বিএনপির কর্মিসভা অনুষ্ঠিত

বাউফলের জেলেদের চাল বিতরণে অনিয়ম: ইউপি সচিবকে শোকজ

লাকসাম ও মনোহরগঞ্জে কোন বৈষম্য রাখবো নাঃ আবুল কালাম

হাটহাজারীতে সরকারি পথে সেমিপাকা ঘর নির্মাণ করে প্রতিবন্ধকতা, চরম দুর্ভোগে কয়েক হাজার মানুষ

বালিয়াকান্দিতে ৩১ দফা বাস্তবায়নে র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

ছুটির দিনেও চড়া মোহনগঞ্জে সবজির বাজার

রায়গঞ্জে ব্যারিস্টার বাতেন : ‘৩১ দফাই শান্তি ও সমৃদ্ধির রূপরেখা’

নরসিংদীতে সবজির বাজারে অস্থিরতা
Link Copied