ঢাকা মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৫

জননেত্রী শেখ হাসিনার জন্য একটি নৈতিক স্কোয়াড


প্রকৌশলী আজিজ মিসির সেলিম photo প্রকৌশলী আজিজ মিসির সেলিম
প্রকাশিত: ১৭-১০-২০২৩ দুপুর ৪:৪৫

যে দলের সদস্যরা মস্তিষ্কে মননে ও হৃদয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ধারণ করে। মস্তিষ্ক, মন ও হৃদয় এর সম্পর্কটা যেমন জটিল, তার চাইতেও অনেক জটিল হচ্ছে। এই তিনটা জিনিসকে আলাদা আলাদা ভাবে ডিফাইন করা এবং  এরা একে অপরকে কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করে। সেই বিষয়টি ডেস্ক্রাইব বা বর্ণনা করা। তবে তিনটি জিনিসই একে অপরকে ছাড়া অসম্পূর্ণ এবং অধিকাংশ বিশেষজ্ঞের মতে মন দ্বারা মস্তিষ্ক তাড়িত। মনের চাহিদা অনুযায়ী মস্তিষ্ক দেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গে সিগনাল প্রেরণ করে এবং অঙ্গপ্রতঙ্গ সেই অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে থাকে, বিষয়টি তাৎক্ষণিক বা ভেবে চিনতে সময় নিয়েও ঘটতে পারে, আর পুরো বিষয়টি নিয়ন্ত্রিত হয় হৃদয় দ্বারা। 
রাজনীতির সাথে স্বার্থের সম্পর্ক জড়িত। কাজেই একজন রাজনীতিবিদ জননেত্রীকে বা উনার আদর্শকে ধারণ করা আর রাজনৈতিক বা অরাজনৈতিক কোন ধরনের স্বার্থ সংশ্লিষ্টতা বিহীন ভাবে তাকে হৃদয়ে, মননে ও মস্তিষ্কে ধারণ করার মধ্যে যোজন যোজন ফারাক আছে।
জননেত্রীর উপর যেকোন এটা দেখে মনে হতে পরে যে, আমার লেখাটির বিষয় শুধুমাত্র জননেত্রী বা আওয়ামীলীগ। বিষয়টি আসলে সার্বজনীন, উদাহরণ স্বরূপ অনেকের নামই আসতে পারে। তবে বাংলাদেশে এধরনের মানুষের সংখ্যা নেহায়েত কম নেই যারা মস্তিষ্কে , মননে ও হৃদয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ধারণ করেন। বর্তমানে এদের বেশিরভাগই রাজনীতির বাহিরে অবস্থান করে। কারণ এরা বিবেক, বুদ্ধি, আবেগ ও অনুভূতি দ্বারা তাড়িত। আর যাদের মননে এসবের স্থান আছে তাদের পক্ষে বর্তমান যুগের রাজনীতি, বিশেষ করে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকাটা শুধু কঠিন নয়। অনেকটা অসম্ভবের পর্যায়ে পরে। তবে এরা প্রয়োজনে  যেহেতু জননেত্রীর বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দেখতে কার্পণ্য করে না সেহেতু অনেকেই ভেবে নেয় যে এরা আওয়ামীলীগ এর কর্মী। আবার আওয়ামীলীগের তথাকথিত পদধারী নেতাকর্মীগণ-ও ব্যবহারের প্রয়োজনে সুযোগ বুঝে তাদের আওয়ামী-কর্মী বা আদর্শিক কর্মী বা নিবেদিত প্রাণ কর্মী হিসেবে চালিয়ে দিতে কার্পণ্য করে না। তবে এদের অধিকাংশই রাজনীতি ও মিডিয়ার অন্তরালে সাধারণ জীবন যাপন করে  থাকে।
শুধুমাত্র জননেত্রী শেখ হাসিনা জন্য নয়। এই ধরনের মানুষের সংখ্যা খালেদা জিয়া এবং অন্যান্য রাজনীতিবিদ সহ শিল্পী সাহিত্যিকদের কেন্দ্র করেও থাকতে পারে। তবে পরিমাণে কমবেশী আছে। যেমন বেশ কয়েকমাস কলকাতা অবস্থানের কারণে পশ্চিম বঙ্গের অনেকের জীবনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর প্রভাব দেখে এবং বাংলাদেশের কিছু মানুষের  কাজী নজরুল ইসলামকে কেন্দ্র করে  কথাবার্তা বা আলোচনায় আমার উনাদের অনুরূপ গ্রুপের মনে হয়েছ। যারা রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলকে ব্রেইনে ধারণ করে। তবে সময়ের সাথে বিবর্ণ বাস্তবতার নিরিখে নিজের মস্তিষ্কে, মননে ও হৃদয়ে অবস্থান করা মানুষের স্বরূপ উন্মোচিত হওয়ার কারণে, এরূপ মানুষের সংখ্যা কমতে বা বাড়তে পারে। যেমন স্বাধীনতার আগে ও পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কে কেন্দ্র করে এরূপ মানুষের পরিমাণের তারতম্য এখনও আমি নিজের বুদ্ধিবৃত্তিক যুক্তিতর্ক দ্বারা মেলাতে পারি না। বিশেষ করে ১৯৭৫ সালের অকল্পনীয় বাস্তবতার প্রেক্ষিতে প্রতিক্রিয়া জানানো মানুষের সংখ্যা বিবেচনায় নিলে, হিসাবটি একেবারেই মেলে না। বিশেষ করে যুদ্ধকালীন সময়ে বঙ্গবন্ধুর নামে মুক্তিযোদ্ধাদের জীবন বাজী রাখার বিষয়টি ছাড়াও। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বন্দি দশা অবস্থায় এনালগ যুগের দেশব্যাপী মানুষের প্রতিক্রিয়ার সাথে কয়েক বছরের ব্যবধানে ১৯৭৫ এর হৃদয়বিদারক ঘটনা। পরবর্তী সময়ে প্রতিক্রিয়া জানানো মানুষের সংখ্যা বিবেচনায় নিলে; এত অল্প সময়ে এত বড় পরিবর্তন যুক্তি ও তর্কের উর্ধ্বে বলেই আমি মনে করি। আমার জন্ম মুক্তি যুদ্ধের পর বলে অনেকেই ভাবতে পারেন ইতিহাসের আলোকে বঙ্গবন্ধুকে কেন্দ্র করে কথাগুলো বলেছি। ইতিহাস সময় ও রাজনীতি দ্বারা প্রভাবিত। সেখানে ঘটনার ব্যাখ্যায় কমবেশি হতেই পারে। কিন্তু সেই সময়ের মানুষদের নিজের মুখে বর্ণনায় উনাদের আবেগ, অনুভূতি ও কর্ম তো মিথ্যা নয়। আমার দাদীর মুখ দিনের পর দিন সেই দিনগুলির বর্ণনা শোনার প্রেক্ষিতেই আমার মস্তিষ্কে বঙ্গবন্ধু ও ক্যাপ্টেন মনসুর এর একটি অবস্থান তৈরী হয়। সম্ভবত তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৬ পূর্ববর্তী সময়ে স্বাধীনতা বিরোধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর সন্ত্রাসীদের সংগঠন এনডিপি এবং জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত বিএনপি সমর্থিত সরকারের সময়, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর নিজের নির্বাচনে এলাকায় অবস্থিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিটিআই চট্টগ্রাম এ স্রোতের বিপক্ষে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে সমর্থন ও সহযোগিতা করার নিমিত্তে ছাত্রলীগ এ আমার যোগ দেয়ার ঘটনাটি ঘটে। আমি পারিবারিক সূত্রে রাজনীতির ধারক ও বাহক নই। আমার বাবা নিতান্তই একজন শিক্ষিত ও আদর্শবান শিক্ষক এবং সাংস্কৃতিক কর্মী। আমার পরিবার কোনভাবেই রাজনীতি করার পক্ষে কখনোই ছিল না। আমারও জীবনে কোনদিন রাজনীতি করার ইচ্ছে ছিল না, এখনও নেই। 
এ কারণেই ছাত্র জীবন পরবর্তী সময়ে রাজনীতিতে অতি গুরুত্বপূর্ণ সিরাজগঞ্জের দুই মহারথী জননেতা মো. নাসিম সাহেব এবং এইচটি ইমাম সাহেবের সংস্পর্শে যাওয়ার কখনোই প্রয়োজনীয়তা অনুভব করি নাই। না চাকরি, না ব্যবসা, না রাজনীতি, কখনোই কোন কারনেই তাদের দ্বারস্থ হয় নাই। তবে আমার জীবনে জননেতা মো. নাসিম সাহেবের একটা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা আছে, ১৯৯৫ সালের ২৪ শে নভেম্বর জিবিত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এর ভয়ংকর এনডিপি সন্ত্রাসী সংগঠন সমর্থিত ছাত্রদল এর হাতে আমি সহ চার পাঁচ জন তৎকালীন বিআইটি ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ আটক হলে জাহাঙ্গীর সাত্তা টিংকু ভাই এবং রাউজান ও রাঙ্গুনিয়ার এলাকাবাসী সহ জননেতা মো. নাসিম ও আব্দুল্লাহ আল হারুন  এর বিশেষ ভূমিকা প্রায় ১৮ ঘণ্টা পর আমাকেসহ আটকদের জীবন ফিরে পেতে সহায়তা করে। সম্ভবত জননেত্রী শেখ হাসিনা উক্ত ঘটনায় ভূমিকা রেখেছিলেন। 
টিংকু ভাইয়ের মুখে শোনা। জননেতা নাসিম সেদিন বিএনপির দলীয় মন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল নোমান এর উপর আমাকে নিজের আপন ভাতিজা হিসেবে পরিচয় দিয়ে তীব্র চাপ প্রয়োগ করেছিলেন সাকা বাহিনীর হাত থেকে আমাকে উদ্ধারের জন্য। যদিও আমি সত্যিই উনার নিজের আপন ভাতিজা নই, এখনো সেই সময়ের ইঞ্জিনিয়ারদের অনেকেই আমাকে নাসিম সাহেবের ভাতিজা বলেই মনে করেন। যাই হোক, সেইসময়ের জননেত্রীর মিশন ও ভিশন, নেতৃত্ব ও সংগ্রাম এবং সাকা-বাহিনীর সহ স্বাধীনতা বিরোধীদের অপতৎপরতা ও তাদের দ্বারা বর্ণনাতিত নির্যাতনের শিকার হওয়া সহ জীবিত অবস্থায় ফিরে আসা, ইত্যাদি ঘটনার প্রেক্ষিতে জননেত্রী শেখ হাসিনা সহ ক্যাপ্টেন মনসুর এবং তার ছেলে মোহাম্মদ নাসিম আমার মস্তিষ্কে নৈতিক একটি অবস্থান তৈরী করে বলেই আমার ধারণা। পরবর্তীতে বিশ্ব ব্যাংকের সাথে অনৈতিক অভিযোগর প্রেক্ষিতে লড়াইয়ে দৃঢ় মানসিকতা প্রদর্শন, কোন সহায়তা ছাড়া নিজেদের সক্ষমতায় পদ্মা সেতুর মতো বৃহৎ প্রকল্প হাতে নেওয়ার সাহস, সেই সাথে কর্মযজ্ঞ শুরু এবং স্বাস্থ্য ও খাদ্য অধিদপ্তরকে ঢেলে সাজিয়ে যুগ উপযোগী করনের উদ্যোগ, বিশেষ করে দুর্যোগপ্রবণ বাংলাদেশে পাঁচ ছয় বছরের জন্য আধুনিক পদ্ধতিতে খাদ্য সংরক্ষণের মাধ্যমে জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। পুরো খাদ্য সংরক্ষণাগার গুলো ম্যানুয়াল থেকে ডিজিটাল সাইলো তে রূপান্তরের দূরদর্শিমূলক প্রকল্প গ্রহণ এবং বাস্তবায়নের জন্য ২০১৫ সালে ‘আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণ আগর প্রকল্প’ এর যাত্রা শুরু করায়, দেশ ও জাতির কল্যাণে জননেত্রী শেখ হাসিনা আমার মস্তিষ্কে, মননে এবং হৃদয়ে পাকাপাকি স্থান করে নেয় বলেই আমি মনে করি।
স্বাস্থ্য খাতের সাথে আমি যুক্ত ছিলাম না। তবে খাদ্য অধিদপ্তরের আওতাধীন অত্যন্ত জটিল এবং টেকনিক্যাল এই প্রজেক্ট এর শুরু থেকেই আমি সহ আমার মত ছাত্রলীগ করে আসা বেশ কয়েকজন প্রকৌশলী নৈতিক দিক থেকে জননেত্রীর ভীষণ বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে যুক্ত হই। যদিও  ২০২০ এর মধ্যে উক্ত প্রজেক্ট সম্পন্ন হয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও অদ্যবধি উক্ত প্রজেক্ট সম্পন্ন হওয়া তো দূরের কথা ভবিষ্যতেও কখনো এই প্রজেক্ট আলোর মুখ দেখবে কিনা তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব ও মতপার্থক্য আছে। বর্তমানে ছাত্রলীগ করে আসা ৪-৫ জন প্রকৌশলীর  মধ্যে আমরা কেউই আর ওই প্রজেক্টের এর সাথে যুক্ত নেই। জননেত্রীর দুর্যোগ কবলিত বাংলাদেশের খাদ্য খাতকে দুর্যোগ মোকাবেলায় উপযুক্ত করে গড়ে তোলার ভিশন ও মিশন দিক ও লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে মুখ থুবড়ে পরে আছে। কেন এবং কাদের কারণে এরূপ একটি দুর্বিসন্ধি মূলক যুগোপযোগী প্রকল্প আলোর পথে না হেঁটে অন্ধকারের পথে হাঁটতে শুরু করেছে। সময় হলে একসময় হয়তো সেটি তুলে ধরবো জাতির কাছে। তবে একথা বলতে পারি জননেত্রীসহ রাজনীতিবিদ এবং সরকারের উচ্চপদস্থ কোন আমলা এ বিষয়ে দায়ী নয়। এরূপ হয়তো আরো অনেক প্রজেক্ট আছে যেগুলো কমপ্লিট হয়েছে অথবা হয়নি। সবগুলিকে কেন্দ্র করে ঢালাওভাবে বর্তমানে সরকার, তথা জননেত্রী শেখ হাসিনা, তথা আওয়ামী লীগকে দায়ী করা হচ্ছে। দুর্নীতিবাজ বলা হচ্ছে এবং আজগুবি ও যুক্তিতর্কহীন নানান ধরনের অপবাদ দেওয়া হচ্ছে। 
নেত্রীর উপর আসা যে কোনো ধরনের অন্যায় অপবাদ এবং আক্রমণের সময়  যেমন তারা নিশ্চুপ বসে থাকতে পারে না এবং প্রয়োজনে প্রতিবাদ করতেও দ্বিধাবোধ করতে না। তেমনই নেত্রীর পক্ষে বলা বা প্রচার করা যে কোন কথা বা স্লোগানকে তারা দেখেও না দেখার ভান করে বসে থাকতে পরে না এবং লাইক, শেয়ার ও কমেন্টস করতে দ্বিধাবোধ করে না।
কারণ এটা ব্রেইন এর খেলা, ব্রেইন তার উপর আসা যেকোন ক্রিয়ার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানাতে বাধ্য, যেমন আমাদের নিজের ও পরিবার সহ একান্ত আপনজনদের উপর আসা যেকোন ক্রিয়ার ক্ষেত্রে  ব্রেইন তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে থাকে। যেখানে যুক্তি, তর্ক, লাভ,ক্ষতি বিচার ও বিশ্লেষণের  কোন সুযোগ থাকে না।
বি দ্রঃ বিষয়টি  রাজনীতিবিদদের জন্য প্রযোজ্য নয়, কারণ রাজনীতি করা আর কাউকে বা কোন আদর্শকে ব্রেইনে ধারণ করা এক জিনিস নয়। রাজনীতি আর রাজনীতিবিদেরা নানান ফ্যাক্টর দ্বারা পরিচালিত বা প্রভাবিত হয়। কিন্তু ব্রেইনে অবস্থান করা নৈতিকতা বা অনৈতিকতা কোন কিছুর দ্বারাই প্রভাবিত বা পরিচালিত হতে পারে না।
উদাহরণ : মশা সহ যেকোন ছোট/বড় যেকোন প্রাণীর আক্রমণে মুহূর্তের মধ্যেই (অটোমেটিক) হাত চলে যায় তা প্রতিহত করতে, সন্তান আক্রান্ত হলে মাতাপিতা আসন্ন বিপদ বা অপদের তোয়াক্কা না করে ঝাঁপিয়ে পরে উদ্ধার করতে, পরিবার/পরিজন ও ভবিষ্যতের অনিশ্চিত দিনগুলোর কথা চিন্তা না করে প্রেমিক/প্রেমিকা বেড়িয়ে পরে অজানার উদ্দেশ্যে।
এরকম হাজারও উদাহরণ দেয়া সম্ভব, যেখানে ব্রেইন তার তার চিন্তা-চেতনা ও যুক্তি-তর্কের সময় বা ফুসরত পায় না অথবা ব্রেইন তার নিজস্ব চিন্তা-চেতনা ও যুক্তি-তর্ক দ্বারা উক্ত বিষয়ে বা সাবজেক্ট এর ক্ষেত্রে বিচার ও বিশ্লেষণ করতে অপারগ হয়ে পরে।
কারণ উক্ত বিষয় বা সাবজেক্ট ব্রেইনে এমন ভাবে অবস্থান করে যে, উক্ত বিষয় বা সাবজেক্ট-ই তখন ব্রেইনকে প্রভাবিত  ও পরিচালিত করে, অন্তত উক্ত বিষয় বা সাবজেক্ট এর নিজস্ব বিষয়াদি বা আদর্শের ক্ষেত্রে।
একারণে সব আওয়ামীলীগ এর সদস্যই নেত্রীর উপর আসা অন্যায় আক্রমণ ও অপবাদের ক্ষেত্রে, অথবা নেত্রীকে অপমান করা হলে, যে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখাবে, প্রতিবাদ করবে, প্রতিরোধ করবে (লিখিত, মৌখিক বা শারীরিক যেকোন ভাবেই হোক না কেন ?) বিষয়টি তেমন নয় !!
এমনকি কেউ যদি তেমনটি করেও থাকে, তাকে তাৎক্ষণিক ভাবে সমর্থন দেবে, অন্যকে এগিয়ে আসতে উৎসাহ দেবে, বিষয়টি তেমনও নয়!! 
অনুরূপ বিষয়টি একইভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য, নেত্রীর কোন বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যদি কেউ যৌক্তিকভাবেও তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে থাকে। প্রতিবাদ করে থাকে, প্রতিরোধ করার আহ্বান জানিয়ে থাকে, বিষয়টি চোখে পড়ার পরও আওয়ামী লীগের সব সদস্যই যে তা লাইক কমেন্ট ও শেয়ার করবে। বিষয়টিকে এমন দেখার বা ভাবার কোন কারণ নেই। কারণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বর্তমানে এমন একটা অবস্থায় পৌঁছেছে যে মুহূর্তের মধ্যেই যেকোনো বিষয়কে তা মানুষ থেকে মানুষে, বিশ্বের এক অংশ থেকে অপর অংশে, পৌঁছে দিতে পারে।
এ কারণেই আওয়ামী লীগ সহ রাজনীতিবিদরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ক্ষেত্রে যেকোন ক্রিয়া বা প্রতিক্রিয়া এড়িয়ে চলেন। দেখেও না দেখার ভান করে থাকন। দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ করতে থাকেন। অতঃপর পরিবেশ অনুকূলে হলে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে থাকেন অথবা প্রতিবাদ ও প্রতিলিপি প্রচার করে থাকন।

কারণ এরা আগে রাজনীতিবিদ, তারপর আওয়ামী লীগ, অতঃপর শেখ হাসিনা বা বঙ্গবন্ধুর সৈনিক। আর যারা বঙ্গবন্ধু বা নেত্রীকে ব্রেইনে ধারণ করে থাকেন, তারা আগে বঙ্গবন্ধু বা জননেত্রী সৈনিক, তারপর আওয়ামী লীগ, অতঃপর রাজনীতিবিদ।
বঙ্গবন্ধু বা জননেত্রী এর সৈনিকেরা; আর যাই হোক না কেন? শেখ হাসিনার উপর যে কোন ধরনের আক্রমণ আঘাত বা অপবাদের ক্ষেত্রে তারা নিশ্চুপ বসে থাকতে পারে না !! আগে-পিছে না ভেবে মুহূর্তের মধ্যেই তারা প্রতিক্রিয়া জানিয়ে থাকে, হতে পারে তা প্রকাশ্যে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ন্যূনতম তারা সমর্থন না জানিয়ে এড়িয়ে যেতে পারে না। এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনুরূপ কোন কিছু চোখে পড়লে, তা লাইক কমেন্টস ও শেয়ার না করে এড়িয়ে যেতে পারে না।
শুধু তাই নয়! মগজে ও মননে একই আদর্শ ধারণকারীদের মধ্যে এক ধরনের ইন্টার কানেকশনও তৈরি হয়ে যেতে পারে। যা উদ্ভূত পরিস্থিতি সাপেক্ষে মুহূর্তের মধ্যেই সকলকে একযোগে প্রতিবাদ জানাতে এবং এক জায়গায় জমায়েত হতে সহায়তা করে। যদিও মোবাইল নেটওয়ার্ক, ইন্টারনেট এমনকি রাডার সিস্টেম বন্ধ থাকে। বিষয়টি,  আমেরিকা সহ পুরো ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের একাংশ সমন্বিতভাবে তুরস্কের বর্তমান প্রেসিডেন্ট এরদোগানকে উৎখাতের  অভিপ্রায়ে ঘটানো অভ্যুত্থানের সময় পরিলক্ষিত হয়েছিল। 
এরদোগান পরিবার সহ অবকাশ যাপনে রাজধানীর বাহিরে থাকায়, অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে প্রথমেই অভ্যুত্থানকারীরা সশস্ত্র একটি গ্রুপকে এরদোয়ানসহ পরিবারকে হত্যার উদ্দেশ্যে অবকাশ যাপন কেন্দ্রের দিকে পাঠায়। অতঃপর আক্রমণের শিকার হয়ে এরদোগান তার মোবাইল ফোন থেকে  সিএনএন সহ গণমাধ্যম বরাবর আক্রান্ত হওয়ার খবর জানিয়ে একটা এসএমএস পাঠালে  এরদোগানের রাজনৈতিক দলের অনুসারীরা সহ তার আদর্শ ধারণকারীরা অর্থাৎ এরদোগানকে ব্রেনে ধারণকারীরা রাস্তায় নেমে আসে। সঙ্গত কারণেই অভ্যুত্থানকারীরা মোবাইল নেটওয়ার্ক ইন্টারনেট সহ উদ্ভূত পরিস্থিতির সাপেক্ষে বিমান বাহিনীর ব্যবহৃত রাডার সিস্টেমও বন্ধ করে দেয়। ফলশ্রুতিতে মার্কিন স্যাটেলাইট সিস্টেমসহ কোন সিস্টেমই অভ্যুত্থান কারীদের নিকট এরদোগানের জীবিত থাকা বা প্রেরিত সশস্ত্র বাহিনীর ইউনিটের হতে ধৃত বা মৃত হওয়ার খবর প্রচার করতে বা জানাতে ব্যর্থ হয়। অথচ রাত্রি শেষ হওয়ার আগেই তুরস্কের কয়েকটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের একটিতে কিছুসংখ্যক পাগল প্রায় এরদোগান ভক্ত জমায়েত হতে থাকে এবং একপর্যায়ে জীবন বাজি রেখে অভ্যুত্থানকারীদের হটিয়ে দিয়ে বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে ফেলে । 
(উল্লেখ্য যে, অভ্যুত্থানের শুরুতেই অভ্যুত্থান কারীরা সকল বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে, যাতে কোনোভাবেই এরদোগান ফিরে আসতে না পারে) অথচ তার অনেক আগে থেকেই পুরো দেশে মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সহ বিমান বাহিনীর রাডার ব্যবস্থা বন্ধ অবস্থায় ছিল !! 
আশ্চর্য হলেও সত্যি যে, কিছুক্ষণ পর কোন ধরনের পূর্ব সংকেত ছাড়া একটি বিমান এসে উক্ত বিমান বন্দরে অবতরণ করে এবং সেই বিমান থেকে এরদোগানসহ তার পরিবার অক্ষত অবস্থায় নেমে আসে। মানুষ থেকে মানুষে মুহূর্তের মধ্যেই পুরো পুরুষকে খবর ছড়িয়ে পড়ে। ঘর থেকে বেরিয়ে মানুষজন ট্যাংক সহ বিভিন্ন অস্ত্র বহনকারী যানবাহন করলো সামনে মানবধর হিসেবে শুয়ে পড়ে, নিজের গাড়ি এনে ট্যাংক বহরগুলোর সামনে দাঁড় করিয়ে দেয়।পুনরায় চালু হয় মোবাইল নেটওয়ার্ক ইন্টারনেট এবং রাবার সিস্টেম।অভ্যুত্থানকারীরা গণ বিস্ফোরণ থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে আত্মসমর্পণ করেভ

তবে দুটো প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যাচ্ছে
যে সমস্ত লোকজন বিমানবন্দর টি ঘেরাও করে অভ্যুত্থানকারীদের ঘটিয়ে বিমানবন্দর দখলে নেয়। তারা কিভাবে বুঝতে পেরেছিল যে এরদোগান বেঁচে আছে, ফিরে আসবে, এবং এই বিমানবন্দরেই তার বিমান অবতরণ করবেন।
সেই সাথে এরদোগানের বিমান বিমানবন্দরের ল্যান্ড করার পর এত দ্রুত কিভাবে সারা দেশব্যাপী তার ফিরে আসার বিষয়টি ছড়িয়ে পড়েছিল ?
অনেক কি দ্বিমত পোষণ করতে পারেন। কিন্তু এক্ষেত্রে আমার যুক্তি হচ্ছে, দোকান ও তার আদর্শকে ব্রেনে ধারণ করা এবং উক্ত ব্রেইনগুলোর মধ্যে উদ্ভূত পরিস্থিতি সাপেক্ষে  ইন্টার কানেকশন তৈরি হওয়া। এবং উক্ত ব্রেন গুলি একই ভাবে এরদোগান, তার আদর্শ ও বুদ্ধিমত্তাকে বিচার বিশ্লেষণ করতে পারা। অনেকটা নিকট ভবিষ্যতে নিজের একান্ত আপনজনের বিপদের বিষয় বুঝতে পারা বা আন্দাজ করতে পারা, বা অনুধাপন করতে পারা। যুক্তিতর্কের বাহিরে হলেও; অনেক পিতা মাতাকে তার সন্তানের ক্ষেত্রে এবং আশেক ও মাসুকের ক্ষেত্রে এরূপ পূর্বাভাস বা ব্রেইনের কেরামতি যেমন বইপুস্তক এর বর্ণনায় পাওয়া যায়, তেমনি বাস্তবেও দু একজনের ক্ষেত্রে ভোটের দেখা যায়।
ইসলামের সুফিবাদ বা মারেফাত এর দর্শন অনুযায়ী আশেক ও মাসুকের অভ্যন্তরে কোন পর্দা বা বাধা থাকতে নেই, যে আশেক ও মাসুকের অভ্যন্তরে কোন বেরিয়ার বা বাধা থাকে, তাদেরকে সত্যিকারের আশেক বা মাসুক বলে না, অর্থাৎ তাদের মধ্যের প্রেম মহব্বত বা ভালোবাসা নিখাদ নয়, অর্থাৎ খাদ যুক্ত; অর্থাৎ যে কোন কঠিন পরিস্থিতিতে নিজ-স্বার্থে আশেক বা মাসুক একে অপরকে ছেড়ে যেতে পারে। একে অপরকে ত্যাগ করতে পারে, একে অপর থেকে আলাদা হয়ে যেত পারে।
ঠিক এর বিপরীত দিকে, অর্থাৎ আশেক ও মাসুক যদি সকল ধরনের বাধা বিপত্তি ও বেরিয়ার অতিক্রম করতে সফল হয়, তাহলে তারা একে অপরের হয়ে যায়, তখন একজন এর চিন্তাধারা ও আদর্শ অন্যের দ্বারা প্রভাবিত এমনকি পরিচালিত হয়। তখন একে অপরের চাওয়া পাওয়া ও নির্দেশনার জন্য জাগতিক কোন বিষয় বা পদ্ধতি বা উপকরণের প্রয়োজন পড়ে না।
মনে করার কোনই কারণ নেই যে, জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ব্রেইনে ধারণ করা মানুষের সংখ্যা নেহায়েত কম। শেখ হাসিনা বা বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসা বা তাদের আদর্শের সৈনিক রূপে নিজেকে পরিচয় দিতে এদের গলাবাজী, সভাসমাবেশ ও টকশো এর প্রয়োজন পড়ে না।
যদি পরিস্থিতি আহবান করে, যদি সেই রকম পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটে, তাহলে শেখ হাসিনা বা জননেত্রীকে রক্ষা করার জন্য গত ১০ বছরে তৈরি হওয়া সুবিধাবাদী হাইব্রিড এই আওয়ামী লীগের প্রয়োজন পড়বে না। জননেত্রীকে ব্রেইনে ধারণ করা জনগণের এই অংশই জননেত্রীর ওই মাঠে নেমে পড়বে। তখন মতাদর্শগতভাবে বিরোধী দলীয় মানুষজন নয়; বরং সুবিধাবাদী ও মুজিব কোটধারী আওয়ামীরা এদের আগ্রাসন ও আক্রমণের শিকার হলেও আশ্চর্য হওয়ার কিছু থাকবে না।
সাধু সাবধান:
শুধুমাত্র পর্দার অন্তরালে থাকা জননেত্রীর এই সৈনিকদের থেকে নয়। সাবধান থাকুন ডিজিটাল বাংলাদেশের ঐ সমস্ত ডিজিটাল ডিভাইস গুলো থেকে ; যেগুলি সর্বত্র এবং সর্ব মুহুর্তে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির দ্বারা, শুধুমাত্র বিরোধী দলীয় মতাদর্শ এর মানুষজন নয়। বরং গত দশক ধরে সুবিধা গ্রহণ করা এই সকল আওয়ামীলীগ ধারী হাইব্রিডদের উপর।এখন নয়, বুঝবেন পরে, সময় হলে। ঘুঘু প্রতিবারই ধান খেয়ে, ফাঁকতালে উড়ে যাবে।বিষয়টি এভাবে ভাবলে ধরা খেতে পারেন। 

এমএসএম / এমএসএম

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার গণতন্ত্রের জন্য চ্যালেঞ্জ

কোচিং-এর গোলকধাঁধায়, শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে গুরুত্ব নেই

সাংবাদিকের দল সমর্থন গণতন্ত্রের জন্য হুমকি

ইঁদুরের কৃতজ্ঞতা

নাগরিক সেবা ও প্রত্যাশার সংকট: রাষ্ট্রীয় কর্মচারী কোথায়?

টেকসই সমাজ গঠনে সাম্য একটি অপরিহার্য ভিত্তি

শুভ জন্মাষ্টমী : সত্য, সুন্দর ও সাম্য প্রতিষ্ঠায় শান্তির বার্তা

রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অপরিহার্য

জনগণের অংশগ্রহণে নির্বাচিতরাই কাশ্মীরের শাসক

স্বৈরশাসকের বিদায়, বিদ্রোহ ও পলায়ন

জনগণের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় তারেক রহমান

এপিআই ও এক্সিপিয়েন্ট উৎপাদনে বাংলাদেশের আত্মনির্ভরশীলতা: স্বাস্থ্য ও অর্থনীতির নবদিগন্ত উন্মোচন

ট্রাম্প-উরসুলার বাণিজ্য চুক্তিতে স্বস্তির হাওয়া