হরিরামপুরে পদ্মা নদীর তীর সংরক্ষণ বাঁধে ধস, ভাঙন আতঙ্ক

মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলায় পদ্মা নদীর তীররক্ষা বাঁধের বেশকিছু অংশে শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন। এতে হুমকির মুখে পড়েছে উপজেলা সদরের বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও ভবন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাজার, ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান। এতে ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে কয়েকটি গ্রামের কয়েক হাজার পরিবার। জরুরিভিত্তিতে বাঁধটি মেরামত করা না হলে হাজারো মানুষকে ভিটেমাটি হারাতে হবে বলে দাবি স্থানীয়দের। তাই অতিদ্রুত বাঁধটি মেরামতের দাবি জানিয়েছেন তারা।
জানা যায়, ২০১৬ সালে নদীভাঙন রোধে ফ্লাড অ্যান্ড রিভার ব্যাংক ইরোশন রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ইনভেস্টম্যান প্রোগ্রাম (প্রথম পর্যায়)-এর আওতায় ৮.৮ কিলোমিটার অংশে নদী তীররক্ষা বাঁধ নির্মিত হয়, যা উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের আলগীরচর থেকে হারুকান্দি ইউনিয়নের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত।
স্থানীয় সূত্র এবং সরেজমিন জানা যায়, এ বছর ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের পর পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধিতে বাঁধে ভাঙন শুরু হয়। ফলে বয়ড়া ইউনিয়নের আন্ধারমানিক, খালপাড় বয়ড়া, দাশকান্দি বয়ড়া, দড়িকান্দি, রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বকচর, আলগীরচর এবং হারুকান্দি ইউনিয়নের দক্ষিণ চাঁদপুর ও হারুকান্দি এলাকায় বাঁধের বেশকিছু অংশে ধস নামে। গত এক সপ্তাহ যাবৎ নদীতে অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে ভাঙনের তীব্রতা বাড়ছে। গত কয়েক দিনে বাঁধের রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের আলগীরচর এলাকায় প্রায় ৫০০ মিটার ভেঙে গেছে। সেখানে নদীতে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি।
এছাড়া আন্ধারমানিক বাজারের পাশে বাঁধের দুই জায়গায় প্রায় ৫০ ফুট অংশ ভেঙে গেছে। ফলে ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে আন্ধারমানিক বাজার, আন্ধারমানিক ইসলামিয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা, ডাকবাংলো, হরিরামপুর পাবলিক লাইব্রেরি, থানা, এমএ রাজ্জাক আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, ভাওয়ারডাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এছাড়া বাঁধ ভেঙে গেলে হুমকিতে পড়বে উপজেলা পরিষদসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরসহ শত শত পরিবারের বসতভিটা। এছাড়া রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের আলগীচর, বকচর, জগন্নাথপুর, ভাওয়ারডাঙ্গী, বয়ড়া ইউনিয়নের দড়িকান্দি, আন্ধারমানিক, খালপাড়, দাসকান্দি এবং হারুকান্দি ইউনিয়নের হারুকান্দি এলাকায় বাঁধের বিভিন্ন জায়গায় ধস শুরু হয়েছে।
পাটগ্রাম অনাথবন্ধু সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক পদ্মাপাড়ের সক্রেটিসখ্যাত হরিপদ সূত্রধর বলেন, ১৯৫৪ সালে যখন আমি চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র, তখন থেকে এ পর্যন্ত পদ্মার ভাঙনই দেখে আসছি। আমার দেখা পদ্মার ভাঙনে হরিরামপুরের শত শত গ্রাম, বাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির, ফসলের ক্ষেত বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনকে আমরা এতদিন ভাগ্য বলেই মেনে নিয়েছি কিন্তু বর্তমানে আধুনিক বিশ্বে প্রযুক্তির এত উন্নয়নের পরও নদীভাঙনকে ভাগ্য বলে মেনে নিতে রাজি নই। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি, হরিরামপুর রক্ষায় ব্যবস্থা নেয়া হোক।
ভাঙনের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকেই দুষলেন 'পদ্মা ভাঙন থামাও, হরিরামপুর বাঁচাও' আন্দোলনের কর্মী মাসুদুর রহমান। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী এবং এমপি মহোদয়ের জন্য আমরা হরিরামপুরের মানুষ ভাঙন থেকে রক্ষা পেয়েছিলাম। আর বাঁধ নির্মাণের পর পানি উন্নয়ন বোর্ড কোনো খোঁজখবর নেয়নি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরও ভাঙন রোধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি।
আন্ধারমানিক গ্রামে বাঁধের ভাঙনের অংশ থেকে ২০ ফুটের মধ্যেই শেখ কাঞ্চনের বাড়ি। তিনি জানান, প্রায় দুই যুগ আগে কুমারদহ বয়ড়া থেকে ভাঙনের কবলে পড়ে ভাওয়ারডাঙ্গী গ্রামে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ৬ বছর পূর্বে সে আশ্রয়ও পদ্মায় ভেঙে গেলে এখানে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, আবারো যদি ভেঙে যায়, তাহলে কোথায় যাব?
এ ব্যাপারে হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান বলেন, আমার মনে হয় বাঁধের কাজগুলো সঠিকভাবে হয়নি, যার কারণে জিওব্যাগগুলো ছিঁড়ে যাচ্ছে, খুলে যাচ্ছে। পানির ঢেউয়ে ঢেউয়ে ভেঙে যাচ্ছে, নষ্ট হয়ে অকার্যকর হয়ে যাচ্ছে। এ কাজগুলো করে কতটুকু লাভ হচ্ছে তা ওনারাই বলতে পারবেন। এখন আবারো ভাঙছে। উপজেলা পরিষদ, থানা, সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে। সরকারের টাকা নষ্ট হচ্ছে কিন্তু কোনো উপকার হচ্ছে না। এলাকার জনগণ সব সময় ভাঙন আতঙ্কে থাকে। বাঁধ যাদের মনিটরিং করার কথা, তাদের কখনো দেখা যায়নি।
হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, আগামীকাল সকাল থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ড আন্ধারমানিক ও আশপাশের এলাকায় ছয় হাজার জিওব্যাগ ডাম্পিং শুরু করবে।
মুঠোফোনে মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাঈনুদ্দিন জানান, আগামীকাল সকাল থেকেই আন্ধারমানিক ও আশপাশের ভাঙনকবলিত স্থানে জিওব্যাগ ডাম্পিংয়ের কাজ শুরু হবে।
নিয়মিত বাঁধ মনিটরিং করা হয়নি- এমন অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, এ অভিযোগ সত্য নয়। আমরা নিয়মিত বাঁধের খোঁজখবর রাখি।
এমএসএম / জামান

বড়লেখায় জীবননাশ ও গুমের আশঙ্কায় আতংকিত ব্যবসায়ী

নাসা গ্রুপের কর্মরত শ্রমিকদের পাওনা বেতন প্রাপ্তির লক্ষ্যে যৌথ আলোচনা সভা

অ্যাকুয়াকালচার নীতির প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে বিভাগীয় কর্মশালা অনুষ্ঠিত

মোরেলগঞ্জে চার লাখ মানুষের সুপেয় খাবার পানির অভাব

রৌমারী উপজেল্ াস্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও ছের গাছের কি দোশ

দুর্গাপূজায় কোন ঝুকি নাই, নিরাপত্তা আমরা দিব, দুর্গাপূজা শুধু একটি উৎসব নয়, এটি বাঙালির সম্প্রীতি ও মহোৎসব

টেকনাফে যৌথ অভিযানে ১ লাখ ২০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার, গ্রেপ্তার ১

হাটহাজারী সাব রেজিস্টার অফিসে মূল দলিলের পাতা গায়েব করে ভুয়া পাতা সংযুক্ত

রাঙামাটিতে বিশ্ব পর্যটন দিবস উদযাপন

বিশ্ব পর্যটন দিবসে পরিচ্ছন্ন অষ্টগ্রাম গড়ার শপথ

কাশিয়ানীতে বাস ও ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষ নিহত-৪, আহত-৩

কেশবপুরের সাংবাদিক কন্যা সোনালী মল্লিক পেলেন ইয়েস কার্ড'
