ঢাকা রবিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৫

চামড়ার দরপতন কার স্বার্থে


এসএম পিন্টু photo এসএম পিন্টু
প্রকাশিত: ২০-৬-২০২৪ দুপুর ৩:৫০

 চামড়া প্রতিটি মানুষের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার্য জিনিষ। চামড়া ব্যবহার করেন না এমন মানুষ খুজে পাওয়া মুশকিল। সমগ্র পৃথিবী জুড়েই চামড়ার ব্যবহার রয়েছে। গৃহস্থালী থেকে শুরু করে মানুষের নিত্য ব্যবহার্য জিনিষপত্র তৈরিতেও এই চামড়া ব্যবহার হয়ে থাকে। চামড়া শুধু দেশেই ব্যবহার হয়না, এটি বিদেশেও রপ্তানি হয়ে থাকে। রপ্তানির দিক থেকে দেশে প্রথম অবস্থানে রয়েছে গার্মেন্টস বা তৈরি পোশাক আর চামড়ার অবস্থান চতুর্থ। প্রতিবছর চামড়া রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে বাংলাদেশ। জিডিপি অর্জনেও এর একটি বড় ভূমিকা রয়েছে। দেশ তথা সারাবিশ্ব যতই উন্নয়নের দিকে এগুচ্ছে ততই সব জিনিষপত্রের দাম বাড়ছে সন্দেহাতিত। কিন্তু এই হিসেবের সাথে গড়মিল দেখা যাচ্ছে শুধু চামড়ার। বিগত ১০ বছর আগের হিসেবে দেখা গেছে চামড়ার ব্যপক দরপতন হয়েছে। ক্ষেত্রবিশেষে এটি ৫০ শতাংশে নেমে এসছে। কিন্তু কেন এই দরপতন? আর এই দরপতনের ফলে কার স্বার্থ রক্ষা হচ্ছে ? এটি নিয়ে ব্যপক আলোচনা সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। ফলে এই বিষয়টি নিয়ে কিছু লেখার চেষ্টা করছি। আর এই বিষয়গুলো জানতে হলে আমাদের নজর দিতে হবে চামড়ার উৎস, ব্যবহার, বিক্রয় পদ্ধতি এবং উপকারভোগী কারা।
চামড়ার উৎস: সবচেয়ে সাধারণ চামড়াগুলি গবাদি পশু, গরু, ছাগল, ভেড়া, অশ্বত্থ প্রাণী, মহিষ, শূকর এবং এবং জলজ প্রাণী যেমন সীল এবং অ্যালিগেটর থেকে আসে। গবাদি পশু সাধারণত মাংস খাওয়ার জন্য জবাই করার পর তার চামড়া বাজারে বিক্রি করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশে যেহেতু মুসলিম ধর্মের লোকের সংখ্যা বেশি তাই তাদের প্রিয় খাবার ও সহজলভ্য হিসেবে গরু, মহিষ ও ছাগলের সংখ্যা বেশি হয়ে থাকে। তবে এরমধ্যে সারাবছরের তুলনায় কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে এই সময়টাতে সবচেয়ে বেশি পশু জবাই করা হয়। ফলে এই সময়ে চামড়া সংগ্রহ করার একটা আগাম প্রস্তুতিও থাকে সরকার কিংবা ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে। আবার এক শ্রেণির মৌসুমী ব্যবসায়ীরাও কিছু লাভের আশায় এই ব্যবসাতে জড়িয়ে পড়েন।
উপকারভোগী: পশু পালনের সাথে জড়িত কৃষক থেকে শুরু করে কসাই ও চামড়া শিল্পের সাথে সম্পৃক্ত ব্যবসায়ী এবং শ্রমিক কর্মচারীরা এর প্রত্যক্ষ উপকারভোগী। পরোক্ষভাবে হিসাব করলে দেশের প্রত্যেক নাগরিকই কোননা কোনভাবে উপকারভোগী। তবে বছরে একবার অর্থাৎ কোরবান মৌসুমে এর সংখ্যা বেড়ে যায়। কারন এই মৌসুমে যারা পশু কোরবান করেন তারা বেশিরভাগই চামড়ার টাকা নিজেরা ভোগ করেননা বলে দেশে একটা রেওয়াজ চলমান আছে। তারা সেটা দান করেন। বিভিন্ন এতিমখানা, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা সেবামূলক প্রতিষ্ঠান এমনকি, দরিদ্র অসহায় জনগোষ্ঠির মাঝে বিতরণ করেন। কেউ কেউ সরাসরি চামড়া দান করেন আবার কেউ কেউ চামড়া বিক্রি করে অর্জিত অর্থ বন্টন করে দিয়ে থাকেন। আবার অনেক সময় কোরবান দাতাকে অপেক্ষাকৃত কম টাকা দিয়ে মৌসুমি কসাই বা চেনা জানা মৌসুমি ব্যবসায়ীরা তা সংগ্রহ করেন। যেহেতু টাকাটা নিজেরা ভোগ করেনা তাই দাম একটু এদিক সেদিক হলেও কোরবানিদাতারা এই নিয়ে তেমন বাড়াবাড়ি করেনা। এর ফলে মালিকের কোন আর্থিক ক্ষতি না হলেও চামড়া বিক্রি করে কাংখিত অর্থ পাচ্ছেনা গ্রহিতারা। আমাদের দেশে এমন অনেক সেবামূলক প্রতিষ্ঠান আছে যারা কোরবানির ঈদকে একটা আয়ের মৌসুম হিসেবে ধরে রাখেন। ফলে তারা ঠকছে চরমভাবে। অন্যদিকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা লাভের পরিবর্তে অনেকসময় লোকসানে পড়ে যান। চামড়ার দরপতনে কারো স্বার্থ থাক বা না থাক কিন্তু এই শ্রেণির লোকগুলো বরাবরই ঠকে যাচ্ছে। 
চামড়ার ব্যবহার: আগেই বলেছি চামড়া ব্যবহার করেন না এমন মানুষ হয়তো খুজে পাওয়া যাবেনা। চামড়া সাধারণত পাদুকা/জুতা, হ্যান্ডব্যাগ,মানি ব্যাগ, লাগেজ, চাবির রিং, বেল্ট, পোশাক, আসবাবপত্র সরঞ্জাম এবং ক্রীড়া সরঞ্জাম সহ নানাবিধ জিনিষ তৈরিতে ব্যবহার হয়ে থাকে। এছাড়াও নতুন নতুন কৌশলে নিত্যনতুন বিভিন্ন আইটেম তৈরি করতে চামড়া ব্যবহার হয়ে আসছে। এছাড়া চামড়া বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করেও আর্থিক সুবিধা ভোগ করছে দেশের জনগণ।
চামড়ার বাজার: ২০১৩ সালে ঢাকায় লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া ৮৫-৯০ টাকা আর খাসির চামড়ার দর ৫০-৫৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর ফলে ওই বছর রাজধানীতে ছোট আকারের গরুর চামড়ার দর ছিল প্রতিটি ১৪০০ থেকে ১৮০০ টাকা, মাঝারি আকারের গরুর চামড়া ১৮০০ থেকে ২৫০০ টাকা। আর বড় আকারের গরুর চামড়ার দর ছিল ৩ হাজার টাকা। তবে এবারের কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ৩ জুন কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। ঢাকায় গরুর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৫-৬০ টাকা, ঢাকার বাইরে ৫০-৫৫ টাকা। এ ছাড়া খাসির লবণযুক্ত চামড়ার দাম ফুটপ্রতি ২০ থেকে ২৫ টাকা এবং বকরির চামড়া ১৮ থেকে ২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ছাগলের চামড়া  ২ টাকা  আর গরুর চামড়া ১০ থেকে ১২ টাকা বর্গফুট (লবনবিহীন) পর্যন্ত বিক্রি করার খবর পাওয়া গেছে। 
গত বছরের তুলনায় এ বছর চামড়ার দাম কিছুটা বাড়লেও গত এক দশকে দেশের কোরবানির পশুর চামড়ার দাম ক্রমান্বয়ে কমেছে। 

তথ্য বলছে, চামড়ার দাম আনুষ্ঠানিকভাবে কমতে শুরু করে ২০১৪ সালে। ওই বছর চামড়া ব্যবসায়ীদের তিন সংগঠন চামড়ার দর ২০১৩ সালের তুলনায় কিছুটা কমিয়ে প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া ৭০-৭৫ টাকা নির্ধারণ করে। যদিও বাস্তবে আরো বেশি দরে বিক্রি হয়েছিল, সেবার পুরান ঢাকার লালবাগে লবনবিহীন প্রতি বর্গফুট চামড়া বিক্রি হয় ৯০-১০০ টাকায়। এরপর থেকে চামড়ার দর শুধু কমেছেই। কমতে কমতে ২০১৯ সালে এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল যে অনেকে চামড়া ফেলে দিয়েছিলেন বা মাটিতে পুঁতে ফেলেছিলেন।  পণ্যের দাম বিশ্লেষক ইনডেক্সমুডির তথ্যানুযায়ী, ২০১৩ সালের জুলাই মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার দাম ছিল প্রতি পাউন্ড প্রায় এক ডলার। আর সে বছর দেশে কোরবানির সময় গরুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল প্রতি বর্গফুট ৮৫ থেকে ৯০ টাকা। এরপর ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার দাম বেড়ে হয় এক ডলার ১৪ সেন্ট। কিন্তু সে বছর দেশে চামড়ার দাম কমানো হয়েছে। সে সময় আগের বছরের চেয়ে ১০ টাকা কমিয়ে প্রতি বর্গফুট চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ৭৫ থেকে ৭০ টাকা। এরপর অবশ্য বিশ্ববাজারেই দাম কমতে থাকে। গত ছয় বছরে বিশ্ববাজারে চামড়ার দাম কমেছে প্রায় ৩০ শতাংশ। আর দেশের বাজারে কমানো হয়েছে প্রায় ৪৫ শতাংশ।


বিক্রয় পদ্ধতি: সাধারণত কসাই বা পশুর মালিক থেকে বা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর মাধ্যমে আড়ৎদাররা সংগ্রহ করেন। পরে তারা তা টেনারি মালিকদের কাছে বিক্রি করেন। টেনারি মালিকরা তা পরিশোধন করে ব্যবহার উপযোগী করে বিভিন্ন পণ্য তৈরি বা বিভিন্ন কোম্পানীর কাছে বিক্রি করেন। আবার কিছু কোম্পানী বিদেশে রপ্তানী করেন। 
চামড়া রপ্তানি: চামড়া-চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকা খাতে ২০২২-২০২৩ অর্থ-বছরের জুলাই মাস পর্যন্ত রপ্তানি আয় হয়েছে ৯৯.৪১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার যা বিগত বছরের একই সময়ের ৯০.৫২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের তুলনায় ৯.৮২% বেশী। উক্ত সময়ের মোট রপ্তানিতে এ খাতের অবদান ২.৪৯%।
বেড়েছে চামড়াজাত পণ্যের দাম: বিগত ১০ বছর ধরে ক্রমাগত চামড়ার ব্যাপক দরপতন হলেও কমেনি চামড়াজাত পণ্যের দাম। বরং উল্টো আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। গণমাধমে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জানা গেছে,  ২০১৩ সাল থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে চামড়াজাত বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়েছে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ। ৫ বছর আগে যে স্যু এক হাজার ৪০০ থেকে এক হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হতো, তা এখন বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার থেকে দুই হাজার ৩০০ টাকায়। দুই হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকার কমে কোনো কোম্পানিরই স্যু মেলে না। একইভাবে চামড়ার তৈরি সকল পণ্যের দাম বেড়েছে।

বিভিন্ন মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে দেখা যায়,কাঁচা চামড়ার কম মূল্যের পেছনে আড়তদার ও ট্যানারি মালিকদের সিন্ডিকেট যেমন দায়ী এর চেয়ে বেশি দায়ী প্রক্রিয়াকরণ ব্যবস্থা। প্রক্রিয়াকরণ ব্যবস্থার ত্রুটির কারনে আন্তর্জাতিক বাজারে সঠিক দাম পাচ্ছেনা এই পণ্যটি। তাই বাধ্য হয়ে কমদামে বিক্রি করতে হচ্ছে। আবার আন্তর্জাতিক মানদন্ড ঠিক করতে না পেরে অনেক প্রতিষ্ঠান ব্যবসা থেকেই ছিটকে পড়েছে। একসময় চামড়া শোধনে পরিবেশের ক্ষতির কারনে মুখ ফিড়িয়ে নেয় ইউরোপের ক্রেতারা। চামড়া শিল্পের পরিবেশগত কমপ্লায়েন্স  ঠিক করতে না পারার ফলে ইউরোপের লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের (এলডব্লিউজি) সনদ মিলছে না। ফলে প্রক্রিয়াজাত চামড়া ইউরোপের বদলে চীনের বাজারে কম দামে রপ্তানি করতে হচ্ছে। আবার বিক্রি কম হওয়ায় এখনো গত বছরের চামড়ার বড় একটা অংশ এখনো রয়ে গেছে আবার অর্থসংকটেও আছে অনেক প্রতিষ্ঠান। ফলে কাঁচা চামড়া কেনায় আগ্রহ কমছে তাদের। 

সরকারের চেষ্টা: এ সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য সরকার আধুনিক ব্যস্থা নেয়ার চেষ্টা করে। ফলে  হাজারীবাগে থাকাকালে ট্যানারিগুলো প্রতিদিন যেখানে ২১ হাজার ৬০০ ঘনমিটার তরল বর্জ্য পরিশোধন না করেই সরাসরি বুড়িগঙ্গা নদীতে ফেলত। দূষণ কমাতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ও বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) নেতৃত্বে সাভারের হেমায়েতপুরে ১ হাজার ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলা হয় চামড়া শিল্পনগরী, যার মধ্যে ৫২১ কোটি টাকা ব্যয় করা হয় কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগার বা সিইটিপি নির্মাণে।


হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি শিল্প সরাতে ২০০৩ সালে সাভার চামড়া শিল্পনগরীর প্রকল্প হাতে নেয় শিল্প মন্ত্রণালয়। মোট ১২ দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে ১ হাজার ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হয় এ শিল্পনগরী।

২০১৭ সালে বিসিকের নেতৃত্বে হেমায়েতপুরে স্থানান্তর হয় ট্যানারি শিল্প। কিন্তু তখনো শেষ হয়নি সেন্ট্রাল অ্যাফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্টের (সিইটিপি) কাজ। ফলে সিইটিপি ছাড়াই কাজ শুরু করে ১০০টির বেশি প্রতিষ্ঠান। এবার ট্যানারির দূষিত পানি মিশতে থাকে ধলেশ্বরী নদীতে। নতুন শিল্পনগরীও আগের মতোই দূষণ ছড়াতে থাকে। সব মিলিয়ে এত বিনিয়োগের পরও চামড়া শিল্পের সফল ক্ষেত্র হিসেবে দাঁড়াতে পারেনি। এমনকি সঠিক পরিকল্পনার অভাবে ব্যবসায়ীদের বিপুল বিনিয়োগও কাজে লাগেনি। 

চট্টগ্রামে চামড়ার ব্যবসা: চট্টগ্রামে চামড়ার ব্যবসা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌছেছে।  ২২টি ট্যানারির মধ্যে ২১টিই এখন বন্ধ। শুধুমাত্র চালু রয়েছে রিফ লেদার লিমিটেড। সেটির চামড়া কেনার চাহিদা ও ট্যানারিতে ধারণ ক্ষমতা রয়েছে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার পিস। জেলা প্রাণি সম্পদ অফিসের তথ্য বলছে চট্টগ্রামে কোরবানে গবাদি পশুর চাহিদা ৮ লক্ষ ৮৫ হাজার। 
চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার সমিতির তথ্য অনুযায়ী, গরু ,ছাগল, মহিষ, ভেড়া, উট মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ৮ লাখ পশু কোরবানি দেয়া হয় চট্টগ্রাম অঞ্চলে। এসব চামড়া বাজারজাত ও সংরক্ষনের জন্য স্বাধীনতার পর বিছিন্নভাবে চট্টগ্রামে গড়ে ওঠে ২২টি ট্যানারি কারখানা। চট্টগ্রামের  ২২টি ট্যানারির ইতোমধ্যে ২১টিই বন্ধ হয়ে গেছে কয়েক বছর আগে।  রিফ লেদার লিমিটেড শুধু টিকে আছে। ফলে এবারও কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে নতুন সংকটে পড়েছে চট্টগ্রামের কাঁচা চামড়ার আড়ৎদাররা। চট্টগ্রামে সমিতিভুক্ত চামড়ার আড়ত রয়েছে ১১২টি। তবে কোরবানির মৌসুমে নতুন করে যুক্ত হন দুই হাজারের বেশি ব্যবসায়ী। ট্যানারি ব্যবসায়ীরা গতবারের সরবরাহ করা পশুর চামড়া কেনার অনেক টাকাই এখনও পরিশোধ না করায় এবার চামড়া সংগ্রহ নিয়ে শঙ্কায় আছেন আড়তদাররা।
চট্টগ্রামে ষাটের দশক থেকে ট্যানারি শিল্প জমজমাট ছিল। ওই সময়কার ট্যানারিগুলো হলো ওরিয়েন্ট ট্যানারি, মেঘনা ট্যানারি, জামান রহমান ট্যানারি, জুবিলি ট্যানারি, সিকো লেদার, চিটাগাং লেদার, কর্ণফুলী লেদার, মদিনা ট্যানারি, মেট্রোপলিটন লেদার, রিফ লেদার। বর্তমানে ওই ট্যানারিগুলোর মধ্যে রিফ লেদারই সচল আছে। বন্ধ হওয়ার পর কোনো ট্যানারি আর সচল হয়নি।

সারাদেশে কোরবানের সংখ্যা: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে এ বছর ঈদুল আজহায় সারাদেশে মোট ১ কোটি ৪ লাখ ৮ হাজার ৯১৮টি গবাদি পশু কোরবানি হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ৩ লাখ ৬৭ হাজার ১০৬টি বা ৩.৭ শতাংশ বেশি। মাঠ পর্যায় থেকে মন্ত্রণালয়ের হাতে আসা তথ্য অনুযায়ী, কোরবানি হওয়া গবাদি পশুর মধ্যে ৪৭ লাখ ৬৬ হাজার ৮৫৯টি গরু, ১ লাখ ১২ হাজার ৯১৮টি মহিষ, ৫০ লাখ ৫৬ হাজার ৭১৯টি ছাগল, ৪ লাখ ৭১ হাজার ১৪৯টি ভেড়া এবং ১ হাজার ২৭৩টি অন্যান্য পশু।
কোথায় কত গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে: এবার সবচেয়ে বেশি পশু কোরবানি হয়েছে ঢাকা বিভাগে (২৫ লাখ ২৯ হাজার ১৮২টি) আর সবচেয়ে কম ময়মনসিংহ বিভাগ (৩ লাখ ৯২ হাজার ৫১৭টি)। এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগে ২০ লাখ ৫৭ হাজার ৫২০টি, রাজশাহী বিভাগে ২৪ লাখ ২৬ হাজার ১১১টি, রংপুর বিভাগে ১১ লাখ ৭২ হাজার ৫৫৩টি, খুলনা বিভাগে ১০ লাখ ৮ হাজার ৮৫৫টি, বরিশাল বিভাগে ৪ লাখ ২৮ হাজার ৪৩৮টি ও সিলেট বিভাগে ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৭৪২টি।
লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক ও সভাপতি, রেলওয়ে জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন। 

এমএসএম / এমএসএম

সাংবাদিকের দল সমর্থন গণতন্ত্রের জন্য হুমকি

ইঁদুরের কৃতজ্ঞতা

নাগরিক সেবা ও প্রত্যাশার সংকট: রাষ্ট্রীয় কর্মচারী কোথায়?

টেকসই সমাজ গঠনে সাম্য একটি অপরিহার্য ভিত্তি

শুভ জন্মাষ্টমী : সত্য, সুন্দর ও সাম্য প্রতিষ্ঠায় শান্তির বার্তা

রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অপরিহার্য

জনগণের অংশগ্রহণে নির্বাচিতরাই কাশ্মীরের শাসক

স্বৈরশাসকের বিদায়, বিদ্রোহ ও পলায়ন

জনগণের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় তারেক রহমান

এপিআই ও এক্সিপিয়েন্ট উৎপাদনে বাংলাদেশের আত্মনির্ভরশীলতা: স্বাস্থ্য ও অর্থনীতির নবদিগন্ত উন্মোচন

ট্রাম্প-উরসুলার বাণিজ্য চুক্তিতে স্বস্তির হাওয়া

মানবিক সংকটের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব

বিশ্ব পানিতে ডুবা প্রতিরোধ দিবস ২০২৫ : গল্পের মাধ্যমে গড়ে উঠুক সচেতনতার বাঁধ