বিজিএমইএর নির্বাচনে ফোরামের প্যানেল লিডার মাহমুদ হাসান খান
দেশের তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনকেন্দ্রিক জোট ‘ফোরাম’ তাদের দলনেতা ঘোষণা করেছেন। ‘সেবা, সততা, সাহস ও সমৃদ্ধি’ এ নীতিতে চলা ফোরামের এবারের দলনেতা রাইজিং ফ্যাশনস’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ হাসান খান বাবু। এর আগে বিজিএমইএর সহ সভাপতিসহ পরিচালক পদে যুক্ত থেকে পোশাক খাতে অবদান রেখেছেন মাহমুদ হাসান। এছাড়া তিনি পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন বিটিএমএ ও বিকেএমইএ’র।
বুধবার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর র্যাডিসন হোটেলে পোশাক খাতের উদ্যোক্তাদের সঙ্গে নতুন প্যানেল লিডারকে পরিচয় করিয়ে দেন নির্বাচনকেন্দ্রিক জোটটির শীর্ষ নেতারা।অনুষ্ঠানে বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি আনিসুর রহমান সিনহা, আনোয়ার-উল-আলম চৌধরী পারভেজ, ড. রুবানা হক উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া আরও ছিলেন ফোরামের সভাপতি এম এ সালাম ও ফোরামের মহাসচিব ড. রশীদ আহমেদ হোসাইনী।
অনুষ্ঠানে বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধরী পারভেজ বলেন, ‘ফোরামের নেতারা ভদ্র ও ভালো। কিন্তু নির্বাচন এলেই ফোরাম হেরে যায়। আমি বলবো, আমরা হারিনি। আমাদের বারবার হারিয়ে দিয়েছে দুষ্টচক্র। ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে যথেচ্ছভাবে ব্যবহার করা হয়েছে।
ফোরাম নেতা বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন, মনে রাখতে হবে বিজিএমইএ কোন পলিটিক্যাল প্ল্যাটফর্ম না। কোন বিষোদগার না করে গঠনমূলক আলোচনা চলতে পারে। বাস্তবতা হচ্ছে আমাদের পণ্যের দাম কমছে, ক্রেতারা আগ্রহ হারাচ্ছে। কলহ করে আমরা বিজিএমইএকে নষ্ট করে দিলাম, ক্রেতারাও এখন বিজিএমইএ সম্পর্কে জানতে চায়।
গত নির্বাচনে সভাপতি পদে হেরে যাওয়া ফোরামের সাবেক প্যানেল লিডার ফয়সাল সামাদ বলেন, আমরা আসলে ভালো নেই। নানা সমস্যায় ব্যবসার পেছনে দৌড়াতে দৌড়াতে আমরা টায়ার্ড হয়ে গেছি। ফোরাম একটি ‘কাজ পাগলের’ প্ল্যাটফর্ম। যারা ফোরামের হয়ে বিজিএমইএতে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছি, তারা শুধু কাজই করেছি। আমরা পলেটিক্স বুঝিনা, শুধু কাজ বুঝি। তিনি বলেন, গত বিজিএমইএ নির্বাচনের দিন আপনারা দেখেছেন কি রকম নির্বাচন দেখেছেন। নির্বাচিত সভাপতিকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাই। সেটি তো জানাতে বাধ্য হয়েছি।
ফোরামের এবারের প্যানেল লিডার মাহমুদ হাসান খান বলেন, ফোরামের নেতারা বিনয়ী, আমিও বিনয়ী, তবে অতি বিনয়ী নই। কোন অনিয়ম হলে প্রতিবাদ করবো। ব্যক্তির ইচ্ছায় নেতা নির্বাচিত হলে সদস্য বাদ দিয়ে আগে তো ওই নেতাকেই খুশি করবেন। আর এ কারণেই এখন জটিলতা বাড়ছে। তিনি বলেন, গত নির্বাচনে ভোটিং ছিনতাই হয়ে গেছিল। বিদ্যুৎ বন্ধ করে ভোট গণনা, সফটওয়্যার বন্ধ করে দেওয়া, কতো কিছুই তো হল। ফোরাম আরও একবার পরাজিত হবে, দুইবার পরাজিত হবে, তবে ফোরাম তাদের মূল মতাদর্শ পরিবর্তন করবেনা।
এসময় প্যানেল লিডার মাহমুদ হাসান খান সাংবাদিকদের বলেন, তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন চান। একই সাথে যারা উদ্যোক্তা ও সংগঠনটির সদস্য তারাই যাতে ভোটার থাকে সেটি নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়ে জানান, নির্বাচনের আগে একটি নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন করে প্রশাসক কে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।
প্যানেল লিডার বলেন, শ্রমিকরা যাতে রাস্তায় না নামে নির্বাচিত হলে সেটি গুরুত্ব দেবেন। একই সাথে মালিক শ্রমিক সম্পর্ক উন্নয়ন তার অগ্রাধিকার।এর আগে, গত ২০ অক্টোবর একাধিক অভিযোগে বিজিএমইএর পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। মূলত বিদায়ী সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা এর নেতৃত্বে ছিলেন। বিজিএমইএর নির্বাচনকেন্দ্রিক দুই জোট সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরাম। গত ১৫ বছরে একবার ছাড়া সব মেয়াদেই সম্মিলিত পরিষদ সংগঠনটির নেতৃত্ব দিয়েছে। সম্মিলিত পরিষদের নেতৃত্বে ছিলেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম এবং সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শেদী ও শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন এবং আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান।
গত মার্চের প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের মাধ্যমে সম্মিলিত পরিষদ থেকে সভাপতি হন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি। যদিও ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর তাকে আর দেখা যায়নি। তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলাও হয়েছে। আর পর্ষদ ভেঙে ১২০ দিনের মধ্যে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন পর্ষদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়
এমএসএম / এমএসএম