শার্শা উপজেলায় বে-দখল হওয়া খাস জমি উদ্ধার অভিযান অব্যহত
যশোরের শার্শায় উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উপজেলাব্যাপী গত ২০ বছর যাবৎ বে-দখল হওয়া সরকারী খাস জমি উদ্ধার অভিযান অব্যহত রয়েছে। ইতিমধ্যে উপজেলার দুইটি মৌজা থেকে দখলে থাকা ১৩৮.৯৭ একর (৪১৭ বিঘা) জমি উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে সাবেক এমপির দখলে থাকা ৩৯.৩৯ একর ও বেনাপোল পৌরসভার সাবেক মেয়র ও বাহাদুরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের দখলে থাকা ৯৮.৫৮ প্রায় ৩০০ বিঘা জমি সরকারি দখল পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। গত বৃহষ্পতিবার সকালে শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডাঃ কাজী নাজিব হাসানের উপস্থিতিতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) নুসরাত ইয়াসমিনের নেতৃত্বে এই খাস জমি উদ্ধার অভিযান পরিচালিত হয়।
উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের বাহাদুরপুর মৌজার ৯৮.৫৮ একর ধানী শ্রেনীর খাস জমি যা বে-দখলে ছিলো তা সরকারি দখল পুনরুদ্ধার করা হয়েছে বলে উপজেলা প্রশাসন সূত্র নিশ্চিত করেন। উদ্ধারের পর দখল পুনরুদ্ধার জমিতে ২শত লাল পতাকা পুতে সীমানা চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় এলাকাবাসীর দেওয়া তথ্য মতে বেনাপোল পৌরসভার সাবেক মেয়র আশরাফুল আলম লিটন ও বাহাদুরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান প্রভাব খাটিয়ে পরিকল্পিত ভাবে দীর্ঘ বছর ধরে সরকারী জমি দখল করে মাছের ঘের তৈরী করে মাছ চাষ করে আসছে। তাদের দাবী অস্থায়ী লাল ফ্লাগ নই,উপজেলা প্রশাসনের উদ্যেগে দখল উদ্ধার জমির সীমানা পিলার পুতে টেকসই স্থায়ী করনের।
সরকারী জমি উদ্ধার অভিযানের নেতৃত্ব দেওয়া উপজেলা নির্বাহী মেজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নুসরাত ইয়াসমিন জানান,বাহাদুরপুর ইউনিয়নের ৩৬নং বাহাদুরপুর মৌজায় ৩টি দাগে সরকারী ৩শ বিঘা জমি দখলে নিয়ে বিশাল মৎস ঘের করে মাছের ব্যবসা পরিচালনা করছিলো সাবেক মেয়র ও ইউপি চেয়ারম্যান। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসলে তা অভিযান পরিচালনা করে দখল পুনরুদ্ধার করা হলো। এর আগে গত ১৯ নভেম্বর ২০২৪ইং তারিখে যশোর জেলার শার্শা উপজেলার লক্ষণপুর ইউনিয়নের হরিনাপোতা মৌজায় শার্শার সাবেক সংসদ সদস্য আফিল উদ্দিনের মালিকাধীন আফিল ব্রিডার ফার্ম লিমিটেড এর অবৈধ্যভাবে দখলকৃত ৪১.৯৬ একর (খাস ৩৯.৩৯ একর ও ভিপি ক তফসিলভুক্ত ২.৫৭ একর) জমি ১৫০টি বাশের খুঁটি ও লাল পতাকা সম্বলিত ফ্ল্যাগ দিয়ে সীমানা চিহ্নিত করে উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক দখল মুক্ত করা হয়। শার্শা সহকারী কমিশনার ভূমি এর কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকারী জমি দখল পুনরুদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করে।
শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. কাজী নাজিব হাসান জানান,গত ১৯ নভেম্বর ও আজ ১২ ডিসেম্বর সকাল হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি)কার্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় সরকারি জমি দখল পুনরুদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করেন। সবধরনের অনিয়ম ও দখলদারদের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসনের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
স্থানীয় বাসিন্দাসহ সরকারী জমি উদ্ধার কার্যক্রমের প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাহাদুরপুর ইউনিয়নে আরও সরকারী খাস জমি রয়েছে যা দখল পুনরুদ্ধার হওয়া প্রয়োজন। এছাড়াও চেয়ারম্যান মফিজুর ও তার ভাই আশা বাওড় সংলগ্ন এলাকার জমি দখলে রেখে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করে বালুর ব্যবসা পরিচলানা করায় ফসলি জমি ক্ষতির সন্মুখীন হচ্ছে। ভুক্তভোগী এলাকাবাসী উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
এমএসএম / এমএসএম