ঢাকা সোমবার, ১০ মার্চ, ২০২৫

এক বছর আগে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ হলেও, এখনো পাওয়া যায়নি তদন্ত প্রতিবেদন

মাদারীপুরের আলোচিত মিথ্যা মুক্তিযোদ্ধার কোটায় একই পরিবারের চারজন করছেন সরকারি চাকরি


মনিরুজ্জামান মনি photo মনিরুজ্জামান মনি
প্রকাশিত: ৯-৩-২০২৫ দুপুর ২:৫৬

বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে জালিয়াতির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধার ভুয়া ওয়ারিশ সনদ তৈরি করে সরকারি চাকরি করছেন একই পরিবারের চারজন । বিগত এক বছর আগে জনস্বার্থে তথ্যপ্রমাণ সহ মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করলেও আজও পর্যন্ত তার কোন সুরাহা হয়নি । মাদারীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজসে তদন্ত প্রতিবেদন আজও পাঠানো হয়নি মন্ত্রণালয়ে । অভিযোগ রয়েছে অভিযুক্ত আলী ইসলামের সাথে বড় ধরনের অর্থের বিনিময়ে তারা তদন্ত প্রতিবেদন চাপা দিয়ে নিজ স্বার্থ হাসিল করতে চাচ্ছেন ।

মুক্তিযোদ্ধা সনদ  ও কাগজপত্র পর্যালোচনা করে জানা যায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা লাল খাঁন এর মৃত্যুর পর তার ওয়ারিশ সনদ জালিয়াতি করে, একই পরিবারের চারজন সরকারি চাকরি করছেন, ঘটনাটি ঘটেছে মাদারীপুর সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নের আদমপুর গ্রামে । একই পরিবারের চারজন হচ্ছে, মুক্তিযোদ্ধা লাল খানের মেয়ের জামাই আলি ইসলাম ওরফে আসলাম (হলফনামায় করছেন নাতিন) তার আপন ছোট ভাই আসাদুজ্জামান (হলফনামায় করছেন নাতিন)। আর দুজন হল মুক্তিযোদ্ধা লাল খানের ছেলে মৃত নজরুল ইসলামের বউ জেসমিন ইসলাম ও রহিমা খাতুন।

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের চেয়ারম্যান আব্দুল আহাদ চৌধুরীর স্বাক্ষরিত মুক্তিযোদ্ধা সনদ সুত্রে জানা যায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ লাল খান, পিতা-মৃত মোঃ খান্দু খান, মাতা-বনা বিবি গ্রাম-আদমপুর ডাকঘর-পেয়ারপুর, উপজেলা-মাদারীপুর সদর,জেলা-মাদারীপুর। মুক্তিযোদ্ধা সনদ নাং-৩৭১৮৮, তারিখ-৬ ডিসেম্বর ২০০০ইং।

মুক্তিযোদ্ধা লাল খান এর মৃত্যুর পর গত ১৮-১২- ২০২২ ইংরেজি তারিখে, পেয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মাহফুজুর রহমান ও সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার তাজনেহার স্বাক্ষরিত ওয়ারিশ সনদে দেখা যায়, আমেনা বেগম তার স্ত্রী, লুৎফা বেগম কন্যা, মোঃ দেলোয়ার হোসেন পুত্র, মৃত মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম খান পুত্র, নাজমা আক্তার কন্যা, মোঃ শহিদুল ইসলাম পুত্র, মনিরুজ্জামান পুত্র, মোছাঃ অনিতা আক্তার সালমা কন্যা, মোছা মনিকা কন্যা ও মো রকিবুল ইসলাম ইসলাম পুত্র। ওই দশজনকে ওয়ারিশ হিসাবে দেখানো হয়েছে । তৎকালীন সময়ে চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান সাহেবের সাথে কথা বললে, তিনি সত্যতা নিশ্চিত করেন ।
বীর মুক্তিযোদ্ধা লাল খানের অষ্টম সন্তান মোছাঃ মনিকার সাথে বিয়ে হয় একই গ্রামের আলী ইসলাম ওরফে আসলাম, পিতা-মৃত সিদ্দিক মুন্সী, মাতা-তাছলিমা খাতুন নামের একজনের সঙ্গে। সেই আলী ইসলাম ওরফে আসলাম ১৩-০৮-২০১৮ সালে আইনজীবী অহিদুজ্জামান (বোরহান) এর মাধ্যমে সিনিয়র জজ আতিকুল ইসলাম এর আদালতে জালিয়াতি করে এফিডেভিট করে নিজের মা তাছলিমা কে বানিয়েছেন তার মৃত শশুর মুক্তিযোদ্ধা লাল খানের মেয়ে, তিনি হয়েছেন মুক্তিযোদ্ধার নাতিন এবং মুক্তিযোদ্ধা কোটায় বর্তমানে আয়কর অফিসের ভৈরব কিশোরগঞ্জে অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত । আলী ইসলাম ওরফে আসলাম এর আপন ছোট ভাই আসাদুজ্জামান ও নকল ওয়ারিশ সনদের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় মাদারীপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অফিস সহায়ক হিসেবে কর্মরত ।

দশ জন ওয়ারিশ ছাড়াও বীর মুক্তিযোদ্ধা লাল খানের তৃতীয় পুত্র মৃত নজরুল ইসলাম খানের দুইজন স্ত্রী লাল খানের মেয়ে পরিচয়ে ওয়ারিশ সনদ ও সার্টিফিকেট জালিয়াতি করে চাকরি করেছেন । তারা মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সরকারি চাকরিতে কর্মরত । মৃত নজরুল ইসলামের প্রথম স্ত্রী মোছাঃ রহিমা আক্তার যাহার এনআইডি নাম্বার ১ ৯ ৮ ৩ ৯ ১ ৯ ৬ ২ ১ ২ ২ ৪ ২ ৯ ৫ ৪ পরিচয় গোপন করে বর্তমানে পাসপোর্ট অফিসে কর্মরত । তার জাতীয় পরিচয় পত্রে পিতার নাম- লালা খান লেখা আছে ।

মৃত নজরুল ইসলাম খানের দ্বিতীয় স্ত্রীঃ মোছাঃ জেসমিন ইসলাম স্বামী মৃত নজরুল ইসলাম, মাতাঃ মোছাঃ পেয়ারা হক জন্মতারিখ ২১ শে মার্চ ১৯৭০, আইডি নাম্বার ৫ ৪ ১ ৫৪ ৮ ৩ ৩ ৫ ০ ৫ ৮ ৫
মোছাঃ জেসমিন ইসলাম পরিচয় গোপন করে নকল ওয়ারিশ সনদ তৈরী করে গত ১৩-৮-১৮ সালে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা লাল খানের মেয়ে পরিচয় দিয়ে ওয়ারিশ সনদ তৈরি করেন । এবং বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় এনবিআর এর অধীন পেনশন ক্লোজিং সেকশনে অফিস সহকারী হিসেবে চাকুরীরত ।
জেসমিন ইসলাম শুধু ওয়ারিশ সনদ জালিয়াতি করেনি, তার এসএসসির সার্টিফিকেট প্রতিনিধির হাতে এসে পৌঁছেছে, সেখানে দেখা যায়, তার নাম-জেসমিন আক্তার পিতার নাম- মৃত লাল খান মাতার নাম-আমেনা বেগম সার্টিফিকেট এ তো জন্ম তারিখ ১/১/১৯৮৮ সাল দেওয়া, অথচ তার এনআইডি তে দেওয়া ২১/০৩/১৯৭০ সাল । মুক্তিযোদ্ধা লাল খানের দ্বিতীয় পুত্র, স্বামী-নজরুল ইসলামের ঠিকানায় জাতীয় পরিচয় পত্র থাকলেও, কিভাবে সে বেতন তুলতে পারে এ বিষয়টি সত্যি ভাবনার জন্ম দেয় । একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে, সব মিলিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় তাদের পরিবার এবং আত্মীয়-স্বজনের ভিতর ১৩/১৪ জন চাকরি করে ।

জনস্বার্থে অভিযোগ করা আরব আলী বিশ্বাস বলেন, দীর্ঘ এক বছর হল তাদের বিরুদ্ধে তথ্য প্রমাণসহ অভিযোগ করেছি,আজও পর্যন্ত প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি । যতটুকু জানতে পেরেছি মাদারীপুর ডিসি অফিসের অফিস সহকারি সোহাগ এবং রাসেল নামীয় দুইজন ব্যক্তি অভিযুক্ত আলী ইসলামের সঙ্গে দেখা করে, বড় ধরনের অর্থের লেনদেন করে তদন্ত প্রতিবেদন চাপা দিতে চাচ্ছেন । জানা যায় তারা যমুনা ফিউচার পার্কে বসে বিষয়টি সুরাহা করেছেন । তিনি আক্ষেপ করেই বলেন, ৫ই আগস্ট এর ঐতিহাসিক বিজয়ের পর ও যদি এই সকল ফ্যাসিস্ট দের বিচার না হয় তাহলে আর বিচার কবে হবে । এ বিষয়ে জানতে মাদারীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অফিস সহকারী সোহাগের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলো তিনি বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন  পেয়েছি ,আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যদি না ছাড়ে আমি কি করতে পারি ?

এমএসএম / এমএসএম

বিসিক মুদ্রণ শিল্পনগরী প্রকল্পের মাটি ভরাটের প্রিলেভেল সার্ভে কাজে প্রকল্প পরিচালকের অনিয়ম-দুর্নীতি

মাদারীপুরের আলোচিত মিথ্যা মুক্তিযোদ্ধার কোটায় একই পরিবারের চারজন করছেন সরকারি চাকরি

নিষিদ্ধ হলেও হিযবুত তাহরীরের প্রকাশ্যে কর্মসূচী ঘোষণা

মিরপুর ফায়ার সার্ভিসের ট্রেনিং কমপ্লেক্সের অফিসার তৌহিদুলের শাস্তি দাবি

বিসিকের প্রকল্প পরিচালক মোঃ রাকিবুল হাসানের ঘুস-দুর্নীতি সমাচার

জমি ক্রয়ের নামে ভাইয়ের বিরুদ্ধে প্রবাসি স্বামীর অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

বিআইডব্লিউটিএ বন্দর শাখার সাবেক পরিচালক সাইফুলের টাকার উৎস কি?

নার্গিসকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি দেওয়া হোক

গাজীপুর গণপূর্তের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল আজিমের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ

গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী আতিকের ঢাকায় ১৯ বছরের লুটপাটের রাজত্ব

মসজিদের নামে জমি দখলের চেষ্টা করছে মল্লিক বিল্ডার্স

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ডিজি আবু সুফিয়ান এর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে টেন্ডার বাতিল এর অভিযোগ

পিডব্লিউডি এর কয়েকজন স্টাফের বিরুদ্ধে আইন ও বিচার বিভাগের সিনিয়র সচিব বরাবর অভিযোগ