ঢাকা সোমবার, ২৩ জুন, ২০২৫

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর

ফ্যাসিস্ট আওয়ামী দোসর পিডি কামাল বহাল তবিয়তে


নিজস্ব প্রতিবেদক photo নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৫-৫-২০২৫ বিকাল ৫:১৫

*ভূয়া বিল ভাউচারে সরকারের শতকোটি টাকা আত্মসাৎ। 

* কানাডাতে সেকেন্ড হোম, দশ কোটি টাকার ফ্ল্যাট ও ছেলের মাধ্যমে ব্যবসা করছেন। 

*চাকরি ছেড়ে দেশত্যাগের গুঞ্জন

ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট আওয়ামিলীগের পতনের পর সরকারি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দপ্তর ও অধিদপ্তরের অসংখ্য কর্মকর্তা-কর্মচারি পালিয়ে গেছেন বা গাঁ ঢাকা দিয়ে আছেন। কেউ কেউ হয়েছেন চাকরিচ্যুত। তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের "কৃষি আবহাওয়া পদ্ধতি উন্নতকরণ প্রকল্পের" প্রকল্প পরিচালক ড. মোঃ শাহ কামাল খান ফ্যাসিস্ট আওয়ামিলীগ সরকারের দোসর হয়েও অর্থ ও বিশেষ ক্ষমতা বলে রয়ে গেছেন ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এসব কর্মকর্তা-কর্মচারি মূলতঃ ফ্যাসিস্ট আওয়ামিলীগের ছত্রছায়ায় কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন। ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার অন্যতম সহযোগী শাহ কামাল খান বিভিন্ন অনিয়ম ও ভূয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সরকারের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করার পরেও এখনো বহাল থাকায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে শাহ কামালের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (কৃষি) এসোসিয়েশনের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের পক্ষে মনির হোসেন কৃষি মন্ত্রণালয় ও দুদকে পৃথক দুটি অভিযোগ দ্বায়ের করেছেন। তিনি অভিযোগে বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের "কৃষি আবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি উন্নতকরণ প্রকল্পের" শীর্ষ দূর্নীতিবাজ প্রকল্প পরিচালক ড. মোঃ শাহ কামাল খান গত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের আমলে ব্যাপক অনিয়ম এবং রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক বনে গিয়েছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের একজন প্রকল্প পরিচালক কিভাবে এত অর্থ সম্পদের মালিক হলেন তা বোধগম্য নয়। উল্লেখ্য ব্যক্তি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে কোন নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা না করে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের আস্থাভাজন দোসর হিসেবে দূর্নীতির একক রাজত্ব কায়েম করেছেন। ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানের পরবর্তীতে অনেক দূর্নীতিবাজ আমলা এবং সরকারি কর্মকর্তারা গ্রেফতার হলেও অদৃশ্য ইশারায় শাহ কামাল খান রয়েছেন ধরা ছোঁয়ার বাইরে এবং রয়েছেন বহাল তবিয়তেই। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে তার বিরুদ্ধে দূর্নীতির বিস্তর অভিযোগ উঠলেও ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। তিনি আরও বলেন, প্রকল্প পরিচালক ড. মোঃ শাহ কামাল খান ১৯৬৯ সালের ২ নভেম্বর বগুড়া জেলার ধুনট উপজেলার খাদুলী গ্রামে এক নিন্ম মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে ২০ তম বিসিএস (কৃষি) ক্যাডারে ২০০১ সালে ৩১শে মে তারিখে কৃষি মন্ত্রণালয়ের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই নানা অনিয়ম ঘুষ-দূর্নীতির অভিযোগ কামাল খানের বিরুদ্ধে। তার দূর্নীতি-অনিয়মের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেন গত ১২ই আগষ্ট ২০২০ সালে কৃষি আবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি উন্নতকরণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে। প্রকল্প পরিচালক হিসেবে যোগদানের পর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে লুটের রাজত্ব কায়েম করেছেন। গড়েছেন বাড়ি, গাড়ি সম্পদের পাহাড়। ছাত্র জীবনে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ এবং পরবর্তীতে আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থেকে দাপটের সাথে অনিয়ম-দুর্নীতি করে ধরাছোঁয়ার বাইরে কামাল। ঢাকার মিরপুরে পুলিশ কনভেনশন হলের পাশে বিজয় রাকিন সিটিতে ৫ কোটি টাকা মূল্যের দুটি অত্যাধুনিক ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন। তার ছেলেকে ৫০ লাখ টাকা খরচ করে কানাডায় উন্নতর শিক্ষা অর্জন করতে পাঠিয়েছেন। মূলতঃ অবৈধভাবে উপার্জিত দেশের বিপুল পরিমাণ অর্থ ছেলের মাধ্যমে বিদেশে পাচার করেছেন মর্মে অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়। এছাড়াও কানাডাতে সেকেন্ড হোম হিসেবে দশ কোটি টাকা মূল্যের ফ্ল্যাট ক্রয় করে ছেলের মাধ্যমে সেখানে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। বগুড়া উপজেলার খাদুলী গ্রামসহ স্ত্রী, শ্বশুর বাড়ির আত্মীয়-স্বজন এবং নামে বেনামে গড়ে তুলেছেন বিঘায় বিঘায় জমি ও প্লট। এছাড়াও রয়েছে কোটি কোটি টাকার ব্যাংক-ব্যালেন্চ। বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর দেশব্যাপী "কৃষি আবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি উন্নতকরণ প্রকল্প" বাস্তবায়ন করা হয়। আইসিটি নির্ভর এই গুরুত্বপূর্ণ, স্মার্ট এবং যুগোপযোগী প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণভাবে দেশের কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে অবদান রাখার কথা থাকলেও প্রকল্প পরিচালক শাহ কামাল খানের স্বেচ্ছাচারিতা এবং অনিয়মের কারণে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে প্রকল্পটি। মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ২০১৬ যুগোপযোগী এই প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০২১ সালেই প্রকল্পটির শতভাগ বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারিত ছিল। কিন্তু বেশ কয়েকটি কারণে প্রকল্পের মেয়াদ দুই বছর বাড়ানো হয়। একনেকের অনুমোদন অনুযায়ী যার মেয়াদ শেষ হবার কথা ছিল ২০২৩ সালের জুনে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, দেশের ৬৪ জেলার ৪৯২টি উপজেলার ৪৫৫৪টি ইউনিয়ন পরিষদেই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হওয়ার কথা ছিল। শুরুতে ১১৯ কোটি ১৮ লাখ টাকা ধরা হলেও পরে বাজেট বাড়িয়ে ২১২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা নির্ধারণ করা এই প্রকল্পটি প্রথম সংশোধিত আকারে ২০২৩ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এরমধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল ১৫ কোটি ২২ লাখ ৬০ হাজার টাকা, এছাড়া প্রকল্প ঋণ বাবদ ব্যায় হয় ১৯৭ কোটি ১৩ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য ছিল আবহাওয়া ও নদনদীর সামগ্রিক অবস্থা সম্পর্কিত উন্নতমানের এবং নির্ভরযোগ্য তথ্য কৃষকের কাছে পৌঁছানো। সেই সঙ্গে এ সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের উন্নত পদ্ধতি ব্যবহারে কৃষি বিভাগের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। কিন্তু দূর্নীতিবাজ প্রকল্প পরিচালক শাহ কামাল খান সঠিকভাবে বাস্তবায়ন না করে অধিদপ্তরের সাবেক ডিজি ও মন্ত্রণালয়ের কতিপয় কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে প্রকল্পে বিভিন্ন ভূয়া বিল ভাউচারে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করার পাশাপাশি দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করে বিদেশ ভ্রমণে আমোদ প্রমোদে সময় পার করেছেন এবং সরকারের কোটি কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যায় করেছেন। এই সময়ে চারবার বিদেশ ভ্রমণের বিষয়টি নিয়ে প্রকল্পের কর্মকর্তাসহ খামারবাড়ি কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভও ছিল ব্যাপক। প্রকল্পে এমন ধীরগতির পরেও প্রকল্প পরিচালক শাহ কামাল খান অধিদপ্তরের ডিজি ও মন্ত্রণালয়ের কতিপয় কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে রয়েছেন বহাল তবিয়তে। অধিদপ্তর সূত্রে আরও জানা যায়, ২০২৪ এর ছাত্রজনতার আন্দোলন দমন করতে সরকারের পক্ষে শাহ কামাল কোটি টাকা খরচ করেছেন। বর্তমানে কামাল দেশ ত্যাগের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন এবং যেকোনো সময়ই তিনি দেশ ত্যাগ করতে পারেন। কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ২০২১-২২ অর্থবছরে ২৬ জুন সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিভূক্ত প্রকল্পসমূহের মে মাস পর্যন্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি নিয়ে পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এরমধ্যে বেশিরভাগ প্রকল্প নিয়েই সন্তোষ প্রকাশ করলেও কিছু প্রকল্পের অগ্রগতি মন্ত্রণালয়ের প্রত্যাশিত অগ্রগতির চেয়ে কম হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়। যার মধ্যে মন্ত্রণালয়ের অসন্তোষের তালিকায় রয়েছে কৃষি আবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি উন্নতকরণ (১ম সংশোধিত) প্রকল্প। ইতিমধ্যে প্রকল্পের কার্যক্রম ও অগ্রগতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। এমনকি সর্বশেষ কয়েকটি এডিপি মিটিংয়ে বারবারই এই প্রকল্পের কার্যক্রম বাড়াতে জোর নির্দেশনা দিয়েছিলেন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। এছাড়া শাহ কামাল খান সৈরাচার শেখ হাসিনার পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কর্তৃক প্রকাশিত গ্রন্থ "মাতৃভূমি"-তে তার লেখা কবিতা "ঐতিহাসিক ১৭ই মার্চ", বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (কৃষি) এসোসিয়েশন কর্তৃক প্রকাশিত "ঠিকানা বঙ্গবন্ধু" স্মারকগ্রন্থে তার লেখা প্রবন্ধ "বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক অবিসংবাদিত নেতার নাম" লিখে বাগিয়ে নিয়েছেন কিছু পদক। তিনি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ লোক প্রশাসন কেন্দ্র (বিপিএটিসি)-তে আওয়ামিলীগের রাজনীতির সক্রিয় কর্মী ছিলেন এবং বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদের আজীবন সদস্য হয়েছেন। অভিযোগকারী শাহ কামাল খানেকে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি করেছেন। এসব অভিযোগের ব্যাপারে ড. শাহ কামাল খানের মোবাইলে ফোনে জানতে চাইলে তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন আমি অনিমও দুর্নীতি করিনি সামনে আমার প্রমোশন কিছু লোক আমার পিছনে লেগেছে। অবৈধ সম্পদের ব্যাপারে তিনি বলেন সবকিছু আয়কর ফাইলে দেখানো হয়েছে। আমি কোন দল করি না, লেখক হিসেবে আমি বিভিন্ন  বই লিখে থাকি।

এমএসএম / এমএসএম

রাজউকের ইমারত পরিদর্শক জয়নাল আবেদিন এর বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ

বসুন্ধরা গ্রুপের বিরুদ্ধে জালিয়াতির মাধ্যমে হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ

বহাল তবিয়তে আছেন আওয়ামী সুবিধাভোগী প্রকল্প পরিচালক মঞ্জুরুল হক!

লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক এমপি আনোয়ার হোসেন খানের বিরুদ্ধে ব্যাংকের হাজার কোটি টাকা আত্মসাত ও বিদেশে পাচারের অভিযোগ

আউটসোর্সিং এ নিয়োগেরনামে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা

নিবন্ধন অধিদপ্তরে ভূতের আঁচড় !

রংপুর জেলা রেজিস্ট্রারের নির্দেশে জালিয়াত চক্র আবারো তৎপর

অভিযোগের অন্ত নেই বিআরটিএ সহকারী পরিচালক নবাব ফাহমে আজিজ-এর বিরুদ্ধে

বিসিক এ আইন কর্মকর্তার বেআইনী কাজ!

ঐতিহাসিক তিন নেতার মাজার অরক্ষিত

রংপুর জেলা রেজিস্টার রফিকুল’এর বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই

ফ্যাসিস্ট আওয়ামী দোসর পিডি কামাল বহাল তবিয়তে

ফেমডম সেশনের নামে নির্যাতন ও পর্নোগ্রাফির চক্র