বেনাপোলে পার্টসের চালানে সাড়ে ১৪ লাখ টাকা জরিমানা

বেনাপোল বন্দরে শুল্ক ফাঁকির ঘটনায় মটরসাইকেল পার্টসের চালানে ৩ মামলায় ১৪ লাখ ৫১ হাজার ৯১৮ টাকা জরিমানা আদায় করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেনাপোল কাস্টমস শুল্কায়ণ গ্রুপ-৬ এর রাজস্ব কর্মকর্তা শামিমা আক্তার। এদিকে শুল্ক ফাঁকির ঘটনা ধরা পড়ার পর কস্টমসের নবগত কমিশনার খালেদ মোহাম্মদ আবু হোসেন বেনাপোলের ব্যবসায়ী সংগঠন সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের সাথে মতবিনিময় করেন। তিনি রাজস্ব ফাঁকি রোধে সতর্কতা ও বেশ কিছু নতুন নির্দেশনা জারি করেছেন।
বেনাপোল বন্দর সূত্রে জানা যায়, গত ২ সেপ্টেম্বর ভারতীয় দুটি ট্রাকে যশোরের “সামিরা ট্রেডিং” ভারত থেকে ২৩৯৪ প্যাকেজে ৩৪ হাজার ৩৩৯ কেজি মটরপার্টস ও এ্যাসোসরিজ পণ্য আমদানি করে। যার এল.সি-৬০০০০০৮৮-৬২৫০১০৬৩৫ ও মেনিফেস্ট নং-৬০১-২০২৫-০০২০০৫৫৭৪৭। বেনাপোল বন্দরের ২৭ নং পণ্যেগারে চালানটি রাখা হয়। এই পণ্য চালানের খালাসের দ্বায়িত্বে ছিল বিতর্কিত সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ওভারসীস ট্রেডিং করর্পোরেশন। পরে পরীক্ষণ সম্পাদিত করার সময় শুল্কফাঁকি ধরা পড়লে বিষয়টি ধামা চাপা দেয়ার জোর চেষ্টা চালানো হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ৩ সেপ্টেম্বর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ওভারসীস ট্রেডিং করর্পোরেশন কাস্টমসে বি/ই নং-সি-৬৮৬১৯ দাখিল করেন। ঐ দিনই (আইআরএম) কর্তৃক রাজস্ব কর্মকর্তা মনিউর রহমানের পূর্ব চুক্তি অনুযায়ী যোগসাজসে পণ্যের চালান পরীক্ষণের জন্য সহকারি রাজস্ব কর্মকর্তা নাঈম ও সোহেলকে প্রাথমিকভাবে আইওয়াশ করতে সেখানে পণ্য ইনভেন্টরি করান। এসময় তারা ৪০০ কেজি ওজন বেশি আছে বলে পরীক্ষণ সম্পাদিত করেন। কিন্তু উক্ত পণ্য চালনটি গোয়েন্দা তৎপরতায় পূনরায় ইনভেন্টরি করলে পরীক্ষণে কারসাজি ধরা পড়ে। এবং পণ্যচালানের মধ্যে ঘোষণাতিরিক্ত ১৭২১ কেজি পণ্য বেশি পাওয়া যায়। এ সময় রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটিত হলে পণ্য চালানটি জব্দ করে কাস্টমস।
কাস্টম নথি নং-৬৬৯৬ মতে, আমদানিকৃত পণ্য চালানের গ্রস ওয়েট ৩৪ হাজার ৩৩৯ কেজি এবং নিট ওয়েট দেখানো হয়েছে ২৬ হাজার ৩২৬ কেজি যা গ্রস ওজন থেকে ৮ হাজার ১৩ কেজি বেশি। অথাৎ পণ্য চালানে টি-আর (ট্যাক্স রেগুলেশনস) ৮ হাজার ১৩ কেজি ছাড় দেওয়ার পরও ১ হাজার ৭২১ কেজি বেশি পাওয়া গেছে। একই ভাবে লাখ লাখ টাকার দেনদরবারে সর্বচ্চ “টি-আর (ট্যাক্স রেগুলেশনস)” মিথ্যা ঘোষণায় পণ্যর চালান খালাশ হয়েছে বলে জানা গেছে।
বেনাপোল কাস্টম সূত্রে জানা যায়, কমিশনার ও অতিরিক্ত কমিশনার শুল্ক ফাঁকির চালান বিচারকার্য পরিচালনা করে আমদানি কারকের মনোনিত সিঅ্যান্ডএফ ওভারসিস ট্রেডিং কর্পোরেশন কর্তৃক কাস্টমস আইন ২০২৩ এর ধারা ৩৩ লংঘন অপরাধ স্বীকারপূর্বক বিচার করে ঘোষণাতিরিক্ত ১৭২১ কেজি পণ্যের বিপরিতে ৫ লাখ ৪১ হাজার ৯১৮ টাকা রাজস্ব ফাঁকি আদায়। ধারা ১৭১(১) এর (৯) ধারা অনুযায়ী আমদানিকারকের উপর ৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা ও ধারা-২০৫ অনুযায়ী পণ্য বাজেয়ান্তির পরিবর্তে বিমোচন জরিমানা ৮৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড আদায় করা হয়। সর্বমোট ১৪ লাখ ৫১ হাজার ৯১৮ টাকা অতিরিক্ত জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
এর আগে জব্দকৃত পণ্য চালান পরীক্ষণে কারসাজি লোপাট কারার চেষ্টা করে বেনাপোল কাস্টমস হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা মনিউর রহমান ও তার সহযোগীরা। জব্দকৃত পণ্য চালানের ব্যাপারে রাজস্ব কর্মকর্তা মনিউর রহমানের কাছে পণ্য আটকের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, পণ্যের চালান জব্দ হয়েছে কিন্তু ফাইল না দেখে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা বলা যাবেনা। কত টাকা জরিমানা হতে পারে জানতে চাইলে তিনি জানান শুল্কায়ন গ্রুপে খোঁজ নেন। তবে নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি আমদানি পণ্যের প্রথমে পরীক্ষণ রিপোর্ট দেওয়ার পরই শুল্কায়ন করা হয়ে থকে। কিন্তু রাজস্ব কর্মকর্তার এমন বক্তব্যের ফলে ধ্রুমজাল সৃষ্টি হয়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজস্ব কর্মকর্তা মনিউর রহমান আইআরএম শাখায় দায়িত্ব পাওয়ার পরই বন্দরে রাজস্ব ফাঁকির উৎসব চলছে। কয়েকটি সিঅ্যান্ডএফের সাথে পূর্ব চুক্তি অনুযায়ী কনসাইনমেন্ট প্রতি লাখ লাখ টাকা ঘুষ বাণিজ্যে করেছে। আইআরএম পরীক্ষণের নামে ‘আইওয়াশে’ কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি হয়েছে। গোয়েন্দা তৎপরতায় জব্দ হওয়া বিতর্কিত সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ওভারসীস ট্রেডিং করর্পোরেশনের রাজস্ব ফাঁকির চালানের একটি। আর এমনই কনসাইনমেন্ট প্রতি লাখ লাখ টাকা ঘুষ আদায়ে নিয়োজিত তার ব্যাক্তিগত এনজিও কর্মী আক্তার ও রাসেল। যা গোয়েন্দা সংস্থাদ্বারা রাজস্ব কর্মকর্তা মনিউর রহমান ও এনজিও কর্মী আক্তার ও রাসেলের মোবাইল ট্যাগ ও কললিষ্ট বের করলে বেরিয়ে আসবে কি পরিমাণ ঘুষ বাণিজ্যে করেছেন। এছাড়া রাজস্ব ফাঁকিতে লিপ্ত সিঅ্যান্ডএফ কারা তাদের তথ্যও পাওয়া যাবে বলে নিশ্চিত করেছে।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, রাজস্ব কর্মকর্তা মনিউর ৫ আগস্ট পরবর্তী (আইআরএম) শাখায় দায়িত্বে রয়েছেন। যেখানে ৬ মাসের বেশি সময় কাওকে রাখা হয়না। অথচ ১১ মাস এই শাখায় তার সেটআপে দুর্নীতির আঁখড়ায় পরিনত হয়েছে। যশোরে বাড়ি হওয়ায় তার লেনদেনের বড় একটা অংশ তার আত্মীয় দিয়ে কাশেকশন হয়ে থাকে। এছাড়াও ছুটির দিনে যশোরে বিলাশবহুল হোটেলে বসে লেনদেন মিটিয়ে নেন বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যে তার সাথে চুক্তিকৃত এমন কয়েকটি পণ্যের চালান দুই দেশেই ধরা পড়েছে। পণ্যের চালান গুলো আইআরএম-শাখারই পরীক্ষণের ছিলো। যা এনবিআর ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সুষ্ঠ তদন্তে বেরীয়ে আসবে।
সূত্রটি আরও নিশ্চিত করে জানান, রাজস্ব কর্মকর্তা মনিউর ও এনজিও কর্মী আক্তার ও রাসেলের আটক সহ তাদের সম্পদ ও সম্পত্তি দুদক ও গোয়েন্দা সংস্থা দ্বারা অভিযান পরিচালনা করলে অবৈধ আয়ের পরিমান সহ থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে বলে দাবি জানিয়েছে।
এমএসএম / এমএসএম

সংসার সামলিয়ে প্রতিমা গড়ছেন নারী শিল্পীরা

‘মাইনোরিটি গ্রুপ’ বা ‘সংখ্যালঘু’ শব্দগুলো সমাজে বিভেদ তৈরি করে-পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর হোসেন

মেয়র নাই, উপজেলা চেয়ারম্যান নাই, রিক্সা থেকে টাকা নিয়ে খায় কে?

মৎস্য অভয়াশ্রমে দেশীয় মাছের প্রাচুর্য সুফল ভোগ করছে এ অঞ্চলের মানুষ

শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে মহারশি নদীর ভাঙা বাঁধ পরিদর্শন জেলা প্রশাসকের

সিলেটে ভূমিকম্প অনুভূত

নির্বাচনে বিএনপির ভোটেই প্রার্থীরা বিজয়ী হবেঃ সিরাজুল ইসলাম সরদার

চৌদ্দগ্রামে পানিতে ডুবে মাদ্রাসার ছাত্রী নিহত

বেনাপোলে পার্টসের চালানে সাড়ে ১৪ লাখ টাকা জরিমানা

"হ্যামিলিনের বাঁশিওয়ালা" কেন্দ্রীয় নেতার আগমনে জন স্রোত

তাড়াশে জাকের পার্টির জনসভা ও র্যালি অনুষ্ঠিত

তানোর-মুন্ডুমালা সড়কের সরু কালভার্টে দুর্ঘটনার ঝুঁকি
