সোনারগাঁয়ে পর্যটক মুখরিত সুলতান গিয়াস উদ্দিন আযম শাহের সমাধি
 
                                    নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের শাহচিল্লাপুর গ্রামে বাংলার স্বাধীন সুলতান গিয়াস উদ্দিন আযম শাহের সমাধি পরিদর্শনে প্রতিদিন ভিড় জমান দেশবিদেশের পর্যটকরা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়া চৌরাস্তা হয়ে শাহচিল্লাপুর গ্রামে আগের মতো তেমন জৌলুস না থাকলেও দেশবিদেশের পর্যটকদের কাছে এখনো আকর্ষনের কমতি নেই এ গ্রামের একটি সমাধিকে কেন্দ্র করে। দেশবিদেশের পর্যটকরা সোনারগাঁয়ে বেড়াতে আসলে অনেকেই বাংলার স্বাধীন সুলতান গিয়াস উদ্দিন আযম শাহের সমাধি পরিদর্শন করতে আসেন। ফলে বছরজুড়েই এ গ্রামে পর্যটকদের পদচারনায় মুখরিত থাকে।
জানা যায়, ১৩৮৯-১৪১০ সাল পর্যন্ত প্রথম ইলিয়াস শাহি রাজবংশের তৃতীয় সুলতান ছিলেন গিয়াস উদ্দিন আযম শাহ। তিনি বাংলার সুপরিচিত সুলতানদের অন্যতম ছিলেন। তার প্রকৃত নাম আযম শাহ। সিংহাসন আরোহনের পর তিনি গিয়াস উদ্দিন আযম শাহ নামে পরিচিত হন। পিতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে তিনি ১৩৮৯ সালে সিংহাসন দখল করেন। ২২ বছর রাজত্ব করার পর ঘাতকরা তার প্রাণ কেড়ে নেন। ১৪১১ সালে নিহত হওয়ার পর তাকে শাহচিল্লাপুর গ্রামে সমাহিত করা হয়। রাজত্বকালে তিনি ছিলেন খ্যাতির শীর্ষে। তার আমলে শিক্ষাদিক্ষা, সাহিত্য, চারু ও কারু কলার উন্নতি হয়। তিনি ন্যায় বিচারক শাসক ছিলেন। পারস্যের বিখ্যাত কবি হাফিজের সঙ্গে ছিল তার বন্ধুত্ব। কবি হাফিজকে বাংলায় নিমন্ত্রন করার জবাবে কবি হাফিজ গিয়াস উদ্দিন আযম শাহকে একটি গজল রচনা করে পাঠিয়েছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার সকালে শাহচিল্লাপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, গিয়াস উদ্দিন আযম শাহের মাজারের পাশে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের একটি বিলবোর্ড। এতে লেখা রয়েছে ‘কোনো ব্যক্তি এ পুরাকীতির কোনো রকম ধ্বংস, বিকৃতি, পরিবর্তন কিংবা ক্ষয়ক্ষতি করলে পুরাকীর্তি আইন ১৯৭৬ এর ১৯ ধারা অনুযায়ী ১ বছর পর্যন্ত জেল বা জরিমানা বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের প্রকৌশলী জাকির হোসেন জানান, ১৯২০ সালের ২২ নভেম্বর সরকার গিয়াস উদ্দিন আযম শাহের সমাধিকে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকায় নথিভূক্ত করে। সর্বশেষ ১৯৮৫ সালে সরকার এ সমাধির সংস্কার কাজ করেন। পুরো সমাধিটি কষ্টি পাথরে গড়া। ১০ ফুট লম্বা, ৫ ফুট চওড়া ও ৩ ফুট উচু এ সমাধির ৩ ফুট উচ্চতার খিলানের উপর আরো দেড় ফুট উচ্চতায় ৭ ফুট লম্বা অর্ধবৃত্তকার কষ্টি পাথরে ঢাকা। ৭ ফুট লম্বা পাথরটির তলদেশ প্রায় ২০ ইঞ্চি চওড়া। মুল সমাধির কার্নিশে রযেছে সুক্ষ্ম কারুকাজ খচিত অলঙ্কার। দুপাশে রয়েছে তিনটি করে তিন খাজ বিশিষ্ট খিলান। খাজের মধ্যে রয়েছে প্রলম্বিত শিকল ও ঝুলন্ত ঘন্টার নকশা। মাজারটি কালো পাথরে তৈয়ারী বলে স্থানীয়রা একে কালো দরগা নামে চিনে। পাথরের গায়ে এমন কারুকাজ করা মাজার বাংলাদেশে বিরল। সমাধির পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে একটি খাল। ধারনা করা হয় তিনি এ খালটি খনন করেছিলেন, শত্রুদের আক্রমন থেকে রক্ষা পেতে।
শাহচিল্লাপুর গ্রামের বাসিন্দা বয়সে প্রবীণ সাবেদ আলী (৬৮) জানান, বাংলার স্বাধীন সুলতান গিয়াস উদ্দিন আযম শাহের সমাধি আমাদের গ্রামে থাকায় আমরা গর্বিত। এ সমাধিকে কেন্দ্র করে পর্যটকদের পদচারনায় সারা বছরই আমাদের গ্রাম মুখরিত থাকে। এ সমাধিকেন্দ্র করে এলাকায় ব্যবসা-বানিজ্য ও সাহিত্য চর্চা বেড়েছে। নতুন প্রজন্ম ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারছে। মুন্সীগঞ্জ থেকে সমাধি পরিদর্শনে আসা ব্যবসায়ী আব্দুল হাকিম জানান, সোনারগাঁয়ে ইতিহাসখ্যাত অনেক পীর আউলিয়াদের সমাধি রয়েছে। দুই সন্তানকে নিয়ে সোনারগাঁয়ে বেড়াতে আসার উদ্দেশ্য হল আউলিয়াদের সমাধি জিয়ারত করা এবং তাদেরকে বাংলার ইতিহাস ও শাসকদের পরিচিতি জানানো।
এমএসএম / এমএসএম
 
                সোনারগাঁয়ে শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টা আটক ১
 
                নার্সিং প্রশাসন একীভূতকরণের প্রতিবাদে পিরোজপুরে মানববন্ধন
 
                চাঁপাই প্রেসক্লাবের স্থায়ী কার্যালয়ের শুভ উদ্বোধন
 
                শ্রীনগরে বসতবাড়িতে হামলা, আহত ৩
 
                মোহনগঞ্জে লোকাল ট্রেনের চলাচল বন্ধ, যাত্রীরা দুর্ভোগে
 
                গোবিপ্রবি প্রশাসনের উদ্যোগে সপ্তাহজুড়ে নানা কর্মসূচি ও উন্নয়ন কার্যক্রম
 
                সর্বস্ব হারিয়ে স্ট্রোকে আক্রান্ত ইউনুসের যাত্রী ছাউনিতে মানবেতর জীবনযাপন
 
                আদমদীঘিতে দাবী মৌলিক উন্নয়ন সংস্থার উদ্যোগে লুম উপ-প্রকল্পের প্রকল্প পরিচিতি কর্মশালা
 
                জয়পুরহাটে তেঘর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষক কে সংবর্ধনা প্রদান
 
                শ্রীপুরে অনুমোদনহীন পশুখাদ্য উৎপাদন: গ্রেজ এগ্রো লিমিটেডকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা
 
                ইন্দুরকানী ইউসিসিএ নির্বাচনে ফায়জুল কবির তালুকদার সভাপতি নির্বাচিত
 
                নোয়াখালীতে সাবেক সেনা কর্মকর্তা জায়গা দখল ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগ
 
                 
                