হারিয়ে যাচ্ছে ধানের গোলা
আধুনিক বিজ্ঞানের যুগে নিত্যনতুন আবিষ্কারের ফলে প্রাচীন বাংলার ইতিহাস ঐতিহ্য আজ বিলুপ্তির পথে। আধুনিক বিজ্ঞানের কলা কৌশলের নিকট মার খেয়ে আস্তে আস্তে বিলুপ্তির পথে হাটছে গ্রামীন বাংলার প্রচীন ঐতিহ্যগুলো। যতই দিন যাচ্ছে ততই যেন মানুষের জীবনে এটে সেটে বসছে আধুনিকতার ছোঁয়া।
হাজার বছরের চলে আসা বাঙ্গালিদের কিছু ঐতিহ্যবাহী জিনিস রয়েছে যা আমরা সেই প্রাচীন কাল হতে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করে আসছি। যেগুলো বাংলার সংস্কৃতির এক একটি উপাদান ও বাঙ্গালী সংস্কৃতির ঐতিহ্যর ধারক বাহক। যা এক সময় গ্রাম বাংলার গৃহস্থের সচ্ছলতা ও সুখ সমৃদ্ধির প্রতিক হিসাবে প্রচলিত ছিল।
গোলা ভরা ধান, গোয়াল ভরা গরু আর পুকুর ভরা মাছ’— গ্রামবাংলার এ ঐতিহ্য নিয়ে প্রচলিত প্রবাদটি আজও মানুষের মুখে মুখে শোনা যায়। কিন্তু গ্রামের পর গ্রাম ঘুরেও দেখা পাওয়া যায় না গোলার। মাঠের পর মাঠ ধানক্ষেত থাকলেও চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকের বাড়িতে নেই ধানের গোলা।আধুনিকতার ছোয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে কৃষিক্ষেত ও কৃষকের ঐতিহ্যবাহী ধানের গোলা। অতীতে গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ কৃষকের বাড়িতে ধান মজুদ রাখার জন্য টিন, বাঁশ , বেত ও কাঁদা দিয়ে তৈরি করা হতো গোলাঘর। এর পর তার গায়ে ভিতরে ও বাহিরে বেশ পুরু করে মাটির আস্তারণ লাগানো হত। চোরের ভয়ে এর মুখ বা প্রবেশ পথ রাখা হত বেশ উপরে।
এক সময়ে সমাজের নেতৃত্ব নির্ভর করত কার কয়টি ধানের গোলা আছে এই হিসেব কষে। শুধু তাই নয় কন্যা ও বর পক্ষের বাড়ির ধানের গোলার খবর নিতো উভয় পক্ষের লোকজন। যা এখন শুধু কল্পোকাহিনী।
গোলা ঘর দেখা যেত অনেক দূর থেকে। গোলা নির্মাণ করার জন্য বিভিন্ন এলাকায় আগে দক্ষ শ্রমিক ছিল। এখন আর দেশের বিভিন্ন জেলা শহর থেকে আসা গোলা নির্মাণ শ্রমিকদের দেখা মেলে না। তারা বাড়িতে এসে টিন, বাঁশ, দিয়ে তৈরি করত ধানের গোলা। কাজ না থাকায় এখন তারা ভিন্ন পেশা বেছে নিয়েছে। এই গোলা ছিল সম্ভ্রান্ত কৃষক পরিবারের ঐতিহ্য। সে সময় ভাদ্র মাসে কাঁদা পানিতে ধান শুকাতে না পেরে কৃষকরা ভেজা আউশ ধান রেখে দিতো গোলা ভর্তি করে। গোলায় শুকানো ভেজা ধানের চাল হত শক্ত। কিন্তু সাম্প্রতিক রাসায়নিক সার, কীটনাশক ও আধুনিক কলের লাঙ্গল যেন উল্টে পাল্টে দিয়েছে গ্রাম অঞ্চলের চালচিত্র। গোলায় তোলার মত ধান আর তাদের থাকে না। গোলার পরিবর্তে কৃষকরা ধান রাখা শুরু করেছে আধুনিক গুদামঘরে। নতুন প্রজন্মের কাছে গোলাঘর একটি স্মৃতিতে পরিণত হয়েছে।
আগামী প্রজন্মের কাছে গোলা ঘর একটি স্মৃতিতে পরিণত হয়েছে। আধুনিক গুদাম ঘর ধানচাল রাখার জায়গা দখল করছে। ফলে গোলা ঘরের ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলা থেকে।সাতকানিয়া উপজেলার এওচিয়া ইউনিয়নের আব্দুল গফুর বলেন, ‘বাপ-দাদার স্মৃতি হিসেবে আজও আমি ধানের গোলাঘর দুইটি ধরে রেখেছি। গোলা ঘরগুলো দাদা ব্যবহার করেছেন তারপর বাবাও ব্যবহার করেছেন। আমি ২০১২ সাল পর্যন্ত ব্যবহার করেছি। কালের বিবর্তনে এখন আর এসবের প্রয়োজন হয় না। শুধু মাত্র পুরনো ঐতিহ্যকে আঁকড়ে ধরে আছি।’
প্রবীণরা জানান, আগের দিনে প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই গোলা থাকত। তবে এখন আর নেই। নাতি-নাতনিদের কাছে বললে তারা বিশ্বাসও করতে চায় না। প্রবাদের সেই গোয়াল ভরা গরু আর পুকুর ভরা মাছ এখনো আছে। দেশের প্রতিটি কৃষক পরিবারে রয়েছে কমপক্ষে একটা, দুটি গরু, পুকুরও আছে অনেকের। শুধু কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে গ্রামীণ ঐতিহ্য ধানের গোলা।
এমএসএম / এমএসএম
দুর্নীতিতে স্বৈরাচার সরকারকেও হার মানিয়েছেন বরগুনার টিসিএফ শহিদুল
বারহাট্টায় বিএনপি'র মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুল হকের শোভাযাত্রা ও সমাবেশ
দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আ.লীগ নেত্রীর দায়ের করা মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
ভূরুঙ্গামারীতে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে গণশুনানী অনুষ্ঠিত
মাগুরা-২ আসনে ধানের শীষের কান্ডারী এ্যাডঃ নিতাই রায় চৌধুরী
পাঁচবিবিতে নবাগত ইউএনও সেলিম আহমেদের যোগদান
দীর্ঘদিন অবহেলার পর রায়গঞ্জে ধর্ষণকাণ্ডের আসামি গ্রেপ্তার
রাণীশংকৈলে কৃষকদের মাঝে সরকারি প্রণোদনার বীজ ও সার বিতরণ
কুমিল্লা-৯ আসনে বিএনপি প্রার্থী আবুল কালামের নির্বাচনি গণসংযোগ শুরু
জুলাই বিপ্লবের মুখ্য বিষয় ছিল বৈষম্যের বিরোধ, পূর্বধলায় গণসমাবেশে মামুনুল হক
বেড়া'য় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে অর্থদণ্ড।
রায়পুর ভূমি অফিসগুলোতে ঘুষ ছাড়া সেবা মিলছেনা সেবা