ভয়ঙ্কর নৃশংসতা!
সংবাদ মাধ্যমে খবর দেখে শিশু-কিশোর ও বয়স্করা আতঙ্কিত

আবারো শুরু হচ্ছে নৃশংসতা! শুধু তাই নয়, ভয়ঙ্কর নৃশংসতা। এক মানুষ অপর মানুষকে ভিন্ন ভিন্ন কায়দা খুন করছে। আর খুন করেই ক্ষ্যান্ত হচ্ছেন না। নিহত ব্যক্তির লাশ টুকরো টুকরো করে কুকুর বিড়াল দিয়ে খাওয়ানোর মত ঘটনাও ঘটছে। আর এসব খবর দেশের স্যাটেলাইট চ্যানেলসহ সংবাদ মাধ্যমে ফলাও করে খবর প্রকাশ হচ্ছে। এতে দেশের শিশু- কিশোর থেকে বয়স্ক নাগরিকরাও আতঙ্কিত।
করোনার মহামারির প্রথমদিকে অপরাধের মাত্রা শূন্যের কোঠায় পৌঁছে ছিল। তখন নৃশংসতা তো দূরে থাক, ছোট ছোট অপরাধের ঘটনাও ঘটেনি। কিন্তু হঠাৎ করেই সারাদেশে আবারো সেই নৃশংসতা! কেন এই নৃশংসতা?
এসব বিষয়ে দেশের নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশিদ সকালের সময়কে জানান, নৃশংস ঘটনার মধ্যে ইমাম ও নারী কর্তৃক খুনের ঘটনাটি মূল্যবোধের অভাব। এর মধ্যে সহনশীলতার কারণে স্ত্রী তার স্বামীকে খুনের পর লাশ টুকরো টুকরো করেছে। আর করোনার কারণে এসব ঘটনা কিছুটা কাজ করছে। অনেকেই কাজকর্ম হারিয়েও এধরণের অপরাধ করছে। তিনি আরো বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মানসিক ভারসাম্যতার কারণে সহকর্মীদের খুন করছে। এখানে সমাজ মূল্যবোধ অভাবের কারণে এই হত্যাকান্ডগুলো ঘটছে বলে তিনি মনে করেন।
দেশের ধর্মীয় আলেমরা বলছেন, মানুষকে বলা হয় ‘আশরাফুল মাখলুকাত’ অর্থাৎ সব সৃষ্টির মধ্যে সেরা জীব। কেননা, সব জীবের মধ্যে একমাত্র মানুষেরই রয়েছে ‘বিবেক’। অথচ সেই মানুষই আজ হয়ে উঠেছে সবচেয়ে হিংস্র ও ভয়ংকর। তুচ্ছ কারণে অসহিষ্ণু, মানুষ হত্যা, খুন করে লাশ টুকরো টুকরো করা, পুড়িয়ে চিহ্ন মুছে ফেলাসহ নানা নৃশংস পন্থার আশ্রয় নিচ্ছে নির্দ্বিধায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল মসজিদের ইমাম মাওলানা মামুনুর রশিদ সকালের সময়কে জানান, পৃথিবী ধ্বংসের আগে বড় বড় ১৪১টি নিদর্শন দেখা যাবে। আর ১৩১টি ছোট ছোট নিদর্শন দেখা যাবে। আর এগুলো রাসুলের জীবদ্বশায় কিছু কিছু ছোট ছোট নিদর্শন দেখে গেছেন। আর এখন প্রতিদিন চারদিকে এত নৃশংস ঘটনা ঘটছে যে ‘মনুষ্যত্বের’ অস্তিত্ব আদৌ আছে কি না নিয়ে সন্দেহ করছেন তারা।
সম্প্রতি রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় যেসব বড় ধরণের অপরাধের ঘটনা ঘটছে, তার মধ্যে নগরীর উত্তরখান এলাকায় মসজিদের ইমাম এক ব্যক্তিকে খুনের পর তার লাশ টুকরো টুকরো করে লুকানোর চেষ্টা করা হয়েছে। আবার বনানী এলাকায় এক নারী তার স্বামীকে হত্যার পর তার লাশটি টুকরো টুকরো করে রাস্তায় ফেলে দিয়েছেন।
দক্ষিণখান সরদার বাড়ি জামে মসজিদের সেপটিক ট্যাংক থেকে গত ২৫মে ভোরে আজহারুল (৪০) নামে এক গার্মেন্টস কর্মীর অর্ধগলিত খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। স্থানীয় এক মসজিদের ইমামের সঙ্গে নিহত আজহারুলের স্ত্রীর পরকীয়া সম্পর্কের জেরে এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডটি ঘটে। এঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে সরদার বাড়ি জামে মসজিদের ইমাম আব্দুর রহমানকে (৬৪) আটক করে র্যাব-১। পরে র্যাব সদর দফতরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক এএসপি আ ন ম ইমরান খান বলেছেন, মসজিদের সেফটি ট্যাংক থেকে নিখোঁজ যুবকের খণ্ডিত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা মসজিদের ইমামকে আটক করা হয়। গত ২৫ মে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
জানা গেছে, এঘটনার আগে থেকেই আজহারুল নিখোঁজ ছিলেন। অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করে র্যাব। তদন্তের ধারাবাহিকতায় মসজিদের ইমাম আব্দুর রহমানকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন আজহারুলের লাশ কেটে ৭ টুকরো করা হয়েছে। পরে পুলিশের সহায়তায় মসজিদের সেপটিক ট্যাংক থেকে খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করে। নিহত আজহারুল একজন গার্মেন্টস কর্মী ছিলেন। তিনি দক্ষিণখানের মধুবাগ এলাকার ইউসুফ গাজীর ৩৯ নম্বর বাসায় ভাড়া থাকতেন। তার বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতী এলাকায় বলে জানা গেছে।
এছাড়া মহাখালী এলাকা থেকে ৬ টুকরো লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এঘটনার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ডিবি পুলিশ রহস্য উদঘাটন ও ঘাতককে গ্রেফতার করে। গত সোমবার ডিবির উপ-কমিশনার মশিউর জানান, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির নাম ফাতেমা। আর নিহত ব্যক্তি ময়না মিয়া তার স্বামী।
সূত্র জানায়, সোমবার ফাতেমাকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদ করে ডিবি। পরে বনানীতে তার দেখানো জায়গা থেকে নিহতের মাথাটি উদ্ধার করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক কলহের জের ধরে ময়নাকে হত্যা করেন তিনি। রোববার রাতে মহাখালীর আমতলি থেকে হাত-পা ও মস্তকবিহীন মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার কয়েক ঘণ্টা পরে মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে কাটা হাত-পা এবং সোমবার দুপুরে বনানীর লেক থেকে বিছিন্ন মাথা উদ্ধার করা হয়। নিহতের আঙুলের ছাপ নিয়ে জানা যায় তার নাম ময়না মিয়া। তিনি অটোরিকশা চালক। বাড়ি কিশোরগঞ্জে। ফাতেমা ছাড়াও তার আরেকটি স্ত্রী রয়েছে। তিনি কিশোরগঞ্জে থাকেন। গ্রেফতারকৃত ফাতেমা হত্যাকান্ডের কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন।
তাছাড়া, রাজধানীর কলাবাগানে চিকিৎসক সাবিরা রহমান লিপির (৪৭) হত্যার পর তার লাশটি পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। এ নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সিআইডি জানিয়েছে, আগুনে দ্বগ্ধ হয়ে নয়, চিকিৎসককে হত্যা করা হয়েছে। সাবিরাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের পর বিছানার তোশকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তবে দাহ্য পদার্থ না থাকায় আগুন তেমন ছড়াতে পারেনি। খবর পেয়ে সোমবার ঘটনাস্থলে যায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ক্রাইম সিন ইউনিট। তারা দগ্ধ লাশ উদ্ধার করে। দাহ্য পদার্থ না থাকায় আগুন তেমন ছড়াতে পারেনি। তবে, সাবিরার শরীরের কিছু অংশ দ্বগ্ধ হয়। আর তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে সাবিরার শ্বাসনালী কেটে ফেলা হয়েছে। তার দেহে রক্ত ও পোড়ার ক্ষত ছিল। ডা. সাবিরার দ্বিতীয় স্বামীর নাম শামসুদ্দীন আজাদ। তার আগের স্বামী সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। তিনি চিকিৎসক ছিলেন। দুই ছেলে-মেয়ের মধ্যে ছেলে আগের স্বামীর ঘরের।
ডা. সাবিরা কলাবাগানের ৫০/১নম্বর বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন। তিনি গ্রিন লাইফ হাসপাতালের রেডিওলোজি বিভাগের চিকিৎসক ছিলেন। ওই বাড়ির একটি ফ্ল্যাট থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি ফ্ল্যাটের দু’টি রুম অন্য একজনকে সাবলেট দিয়েছেন। এঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েকজনকে হেফাজতে নিয়েছে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। বিস্তারিত তদন্তের পরই বলা যাবে।
এছাড়া, গাজীপুর সদরে এক গৃহবধূর সাত টুকরো লাশ গুমের চেষ্টা করা হয়েছে। পুলিশ নিহতের উদ্ধারের পর তার স্বামীকে আটক করেছে। সম্প্রতি গাজীপুরের মনিপুরের তিনটি জায়গা থেকে ওই নারীর লাশের টুকরোগুলো উদ্ধার করা হয়। তার স্বামী জুয়েলের বাড়ি সুনামগঞ্জের বিশ্বাম্ভরপুর কচিরগাতি গ্রামে।
পুলিশ জানায়, দুই বছর আগে জুয়েলের সঙ্গে ওই নারীর বিয়ে হয়। প্রেমে জড়িয়ে তারা পালিয়ে বিয়ে করে মনিপুর এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। পারিবারিক কলহের এক পর্যায়ে শৌচাগারে ঢুকে আত্মহত্যা করেন এই নারী। স্ত্রী মারা যাওয়ার পর ফেঁসে যাওয়ার ভয়ে লাশ গুম করতে সাত খণ্ড করে কাপড়ে মুড়িয়ে হোতাপাড়া মনিপুর এলাকায় ফেলে রাখা হয়। জুয়েলের স্ত্রী একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। জুয়েলও চাকরি করতেন। তবে চাকরি চলে গেলে কাপড়ের ব্যবসা শুরু করেন। এঘটনার পর স্থানীয়রা ফোন দিয়ে ঘটনা সম্পর্কে অবগত করার পর স্বামীকে আটক করি এবং তার স্বীকারোক্তি মতো ভাড়া বাড়ির আশপাশে তল্লাশি চালিয়ে লাশের সাতটি খণ্ড উদ্ধার করা হয়।
আর খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় আবুল বাশার হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। আর্থিক লেনদেন নিয়ে তাকে খুনের পর তার লাশ গুম ও ব্যবহৃত আলামত পুড়িয়ে নষ্ট করে। বুধবার দুপুরে খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আব্দুল আজিজ জানিয়েছেন, আর্থিক লেনদেন নিয়ে কথা কাটাকাটির জের ধরে মো. আবুল বাশারকে হত্যা করা হয়। হত্যার পর আসামিরা লাশ গুম ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আলামত জ্বালিয়ে নষ্ট করে। ঘটনায় গ্রেফতারকৃত সালাম ও আনোয়ার আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
এমএসএম / এমএসএম

বিসিক মুদ্রণ শিল্পনগরী প্রকল্পের মাটি ভরাটের প্রিলেভেল সার্ভে কাজে প্রকল্প পরিচালকের অনিয়ম-দুর্নীতি

মাদারীপুরের আলোচিত মিথ্যা মুক্তিযোদ্ধার কোটায় একই পরিবারের চারজন করছেন সরকারি চাকরি

নিষিদ্ধ হলেও হিযবুত তাহরীরের প্রকাশ্যে কর্মসূচী ঘোষণা

মিরপুর ফায়ার সার্ভিসের ট্রেনিং কমপ্লেক্সের অফিসার তৌহিদুলের শাস্তি দাবি

বিসিকের প্রকল্প পরিচালক মোঃ রাকিবুল হাসানের ঘুস-দুর্নীতি সমাচার

জমি ক্রয়ের নামে ভাইয়ের বিরুদ্ধে প্রবাসি স্বামীর অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

বিআইডব্লিউটিএ বন্দর শাখার সাবেক পরিচালক সাইফুলের টাকার উৎস কি?

নার্গিসকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি দেওয়া হোক

গাজীপুর গণপূর্তের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল আজিমের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ

গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী আতিকের ঢাকায় ১৯ বছরের লুটপাটের রাজত্ব

মসজিদের নামে জমি দখলের চেষ্টা করছে মল্লিক বিল্ডার্স

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ডিজি আবু সুফিয়ান এর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে টেন্ডার বাতিল এর অভিযোগ
