সজীব গ্রুপে দাহ : শোক ও শক্তির সমন্বয়ে সমাধান খুঁজতে হবে
দেশের সেরা এবং অন্যতম নির্ভরশীল একটি শিল্পগ্রুপ হচ্ছে সজিব গ্রুপ। প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশে ও দেশের বাইরে এ প্রতিষ্ঠানটি অত্যন্ত সুনামের সাথে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে।পণ্যের মান ও কর্মিবান্ধব প্রতিষ্ঠান হিসেবে সজিব গ্রুপের সুনাম রয়েছে। সেই প্রতিষ্ঠানের একটি কারখানায় সম্প্রতি ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে প্রাণ হারিয়েছে অর্ধ শতাধিক নারী পুরুষ। যা জাতীয় জীবনে গভীর শোকের ছাঁয়া ফেলেছে। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ দেশী বিদেশী শ্রমিক ফেডারেশন এ ব্যাপারে শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ঘটনা স্থল পরিদর্শন করে বলেছেন সরকারের সাধ্য অনুযায়ী নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপুরণ ও আহদের চিকিৎসা সহ ক্ষতিপুরণ দেবে সরকার। সেই সাথে এ ঘটনায় কারো কোন গাফিলতি পেলে অবশ্যই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে সরকার। সরকার অবশ্যই এ ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল হবে এটাই প্রত্যাশিত। পাশাপাশি দেশের মানুষের আবগও ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের প্রতি সবাই সমমর্মি হবেন এটাও স্বাভাবিক। এখানে একই সাথে কষ্ট হলেও একটি কথা আমাদের মাথায় রাখতে হবে যে, যে প্রতিষ্ঠানে অগ্নিকান্ড ঘটেছে সে প্রতিষ্ঠানের মালিক পক্ষ কোন ভাবেই কম ক্ষতিগ্রস্থ হননি। জীবনের সব টুকু মেধা ও শ্রমে তিল তিল করে গড়ে তোলা একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে একজন উদ্যোক্তাও তাদের পরিবারের সদস্যদের যে ত্যাগ ও শ্রম মিশে থাকে তা অনেক ক্ষেত্রে অকল্পনীয়।
আগুনে ঝলসে যাওয়া হাসেম ফুডের ওয়েব সাইডে গিয়ে দেখা গেছে সেখানে একটি শোকবার্তা ঝুলছে। তাতে লেখা আছে আমরা এই অনাকাঙ্খিত ঘটনায় শোকাহত। ঘটনায় নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। সেই সাথে আহত ও ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের পাশে আমরা থাকব। পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সকালের সহযোগিতা ও দেশবাসীর দোয়া কামনা করা হয়েছে। দেশের ব্রেকিং যে সব সংবাদ প্রকাশ পাচ্ছে করোনার সংবাদ ছাপিয়ে হাসেম ফুডের ৮জন কর্মকর্তার গ্রেফতার এবং তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের খবর রয়েছে অনেকটা শীর্ষে। যারা গ্রেফতার হয়ে রিমান্ডে রয়েছেন তাদের মধ্যে গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা তার ছেলেসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্য রয়েছেন। ঘটনার আকষ্মিকতায় দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা গ্রেফতার হবেন, তারা জবাবদিহির আওতায় আসবেন এটা অস্বাভাবিক নয়।
কিন্তু এ কথাও মনে রাখা জরুরী একটি দূর্ঘটনার পর যদি দায়িত্বশীর সবাই বন্দি হয়ে যান তাতে সমস্যা কমার চেয়ে বাড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এ সময় উপস্থিত সিদ্ধান্ত নেয়ার মতো দূরদর্শি নেতৃত্ব খুব বেশী প্রয়োজন পড়ে। যিনি তিলে তিলে এত বড় একটি শিল্পগ্রুপের জন্মদিয়েছেন সেই প্রতিষ্ঠানের চরম দুঃসময়ে জিজ্ঞাসাবাদের নামে যদি তাকে আটকে রাখা হয় তাতেতার তার ব্যক্তিগত মানসিক চাপ আরো বেড়ে যায়। শুধু তিনি নন হয়তো ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত না থাকার পর শুধূ ভবিষ্যৎ কর্ণধর হিসেবে কোম্পানীর বড় কোন পদ আগলে আছেন তার প্রিয় কোন সন্তান! তার গ্রেফতারে মানসিক চাপ বেড়ে যেতে পারে। যা একটি ক্ষতিগ্রস্থ শিল্পগ্রুপের জন্য আরো বেশী বেদনার কারণ হয়ে উঠতে পারে।
এ কারণে দায়িত্বশীলদের উচিৎ ঘটনার পারিপার্শিকতার সাথে আবেগের পাল্লার পাশাপাশি বাস্তবতা সামনে রেখেই সিদ্ধান্ত নেয়া। একজনকে জিজ্ঞাসাবাদ বা তথ্যের প্রয়োজনে তাকে নিজেদের জন্য সেফ কোন জিম্মায় রেখে সহযোগিতা করা যেতে পারে। যেন শ্রমিকদেও পরিবারের মতো তিনিও বুঝতে পারেন তিনি একা নন। সরকার দেশবাসি সমাজ সবাই এই মহা দুঃসময়ে তার বা তার পরিবারের পাশে আছেন। ঘটনার দায় থেকে দূরে থাকতে এমন পরিস্থির পর কেউ বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেই পারে। সেটাও দেখা দরকার। কিন্তু সব ছাপিয়ে একটি শিল্পগ্রুপ গড়ে উঠে মালিক- শ্রমিকের যৌথ অংশিদারিত্বে। এখানে উভয়ই উভয়ের পরিপূরক। তাই শুধূ আবেগ বা ভাবাবেগে তাড়িত না হয়ে বাস্তবতার কঠিন স্পর্শে পরিস্থিতি মোকাবেলার চেষ্টা হলে তা দেশের শিল্পায়ন, উন্নয়ন ও মানবিকতার সব বিচারেই সবার জন্য মঙ্গল হতে পারে।
এমএসএম / জামান
জুলাই সনদ, গণভোট ও নির্বাচন
বিমানবন্দরে দর্শনার্থীদের বিশ্রামাগার জরুরি
ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে সচেতনতার বিকল্প নেই
ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের অগ্রনায়ক তারেক রহমান
তারেক রহমানের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও বিচক্ষণতা
গণতন্ত্র, সুশাসন এবং জনগণ
বৈষম্য ও দারিদ্র্য কমাতে সমাজ ও রাষ্ট্রের দায়
গ্রামীণ ঐতিহ্য ও শীত কালীন রসদ সুমিষ্ঠ খেজুর রস
প্রতিশোধের রাজনীতি জাতির জন্য এক অভিশাপ
জলবায়ু সম্মেলন ও বিশ্বের ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী
দেশ ও দল পরিচালনায় একই ব্যক্তি নয়
৭ নভেম্বর: “সার্বভৌমত্ব রক্ষার বিপ্লব ও বাংলাদেশের নবজাগরণ”